মুক্তি পেল বাকি ৩৬ শিশুও

আদালতের নির্দেশনার পর র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত হয়ে গাজীপুরের টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ১০৯ শিশুর মধ্যে মুক্তি পেল আরও ৩৬ শিশু। আজ মঙ্গলবার ও গতকাল সোমবার নিজ নিজ পরিবারের কাছে শিশুদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত হয়ে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ১২১টি শিশুর সবাই মুক্তি পেল।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন সময় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত হয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ১২১ শিশুর মধ্যে ১১ (১২ বছরের নিচে) শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয় গত ১১ নভেম্বর রাতে। এর মধ্যে সাজা ভোগ করে আগেই ছাড়া পেয়েছিল একজন। বাকি ১০৯ শিশু, যাদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছর, তাদের জামিনের জন্য একজন আইনজীবী নিয়োগ করে দিয়েছিল শিশু উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তিনি শিশুদের পক্ষ হয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে আপিল করলে সব শিশুকে জামিন দেন আদালত।

কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক মো. এহিয়াতুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আসা ১২ বছরের নিচে থাকা ১১ শিশুকে আমরা মুক্তি দিয়েছি নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পরপরই। বাকি ১০৯ জনকে (১২ থেকে ১৮ বছর) সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে ছয় মাসের জামিন দেওয়া হয়েছিল। এই শিশুদের জামিনের সুবিধার্থে হয়রানি কমাতে আমাদের পক্ষ থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনিই শিশুদের কাগজপত্র ঠিকঠাক করে সংশ্লিষ্ট আদালতে যোগযোগ করলে জামিন পায় সব শিশু। এরপর ধাপে ধাপে আমাদের হাতে জামিনের আদেশ পৌঁছালে মুক্তি পায় সবাই। এখন আর ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত কোনো শিশু কেন্দ্রে নেই।’

২০১৩ সালের শিশু আইন বলছে, ‘বিদ্যমান অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে অনূর্ধ্ব–১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল ব্যক্তি শিশু হিসেবে গণ্য হবে।’ ১৬ ধারা বলছে, ‘আইনের সঙ্গে সংঘাতে আসা শিশু কর্তৃক সংঘটিত যেকোনো অপরাধের বিচার করবার জন্য প্রত্যেক জেলা সদরে এক বা একাধিক শিশু আদালত থাকবে। কোনো অপরাধ সংঘটনে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু একত্রে জড়িত থাকলেও শিশুর বিচার শুধু শিশু আদালতই করবে। শিশু আদালতেরও সাজসজ্জা ও ধরন ভিন্ন হতে হবে। অপরাধ অজামিনযোগ্য হোক বা না হোক, আদালত শিশুকে জামিনে মুক্তি দিতে পারবে। এমনকি আদালতে শিশুর প্রথম হাজির করবার ২১ দিনের মধ্যে প্রবেশন কর্মকর্তা একটি সামাজিক অনুসন্ধান দাখিল করবেন। প্রবেশন কর্মকর্তা বা বৈধ অভিভাবকসহ আইনজীবীর উপস্থিতি আদালতে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’