চবি ছাত্রলীগে পাল্টাপাল্টি মামলা, সংঘর্ষের আশঙ্কা

মারামারির ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও ভার্সিটি এক্সপ্রেস একে অপরের বিরুদ্ধে এই মামলা করে। এতে ফের মারামারির আশঙ্কা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগ নেতারা দায়ী করছেন পরস্পরকে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান (বিপুল) ও প্রদীপ চক্রবর্তীসহ ভিএক্সের ২০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন সিএফসির নেতা ও সাবেক সহসভাপতি সুমন নাসির। এর আগে গত শনিবার ভিএক্সের পক্ষ থেকে সুমন নাছিরসহ ১৬ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে মামলা করেন ছাত্রলীগ কর্মী মো. জাহিদ হাসান।

মামলার বিষয় প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ আলম। তিনি বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আধিপত্য বিস্তার ও হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাটহাজারী উপজেলার এগারো মাইল এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের অনুসারী সিএফসি পক্ষের দুই নেতাকে মারধর করা হয়। এ জন্য ছাত্রলীগের আরেকটি পক্ষ ভিএক্সের অনুসারীদের দায়ী করা হয়। জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাতেই অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দেয় ছাত্রলীগের একাংশ। এই সময় প্রক্টর ও পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।

সিএফসি পক্ষের নেতা-কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং ভিএক্সের নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

সংঘর্ষের আশঙ্কা
রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে সিএফসির ডাকা অবরোধ তিন দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল। তবে সিএফসির ও ভিএক্সের পাল্টাপাল্টি এই মামলার পর আবার মারামারি আশঙ্কা দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পাল্টাপাল্টি মামলার অর্থ হচ্ছে ঝামেলা শেষ হয়নি। এরপর আবার মারামারি হওয়া আশঙ্কা থেকে যায়। যদি ছাত্রলীগের গ্রুপিং রাজনীতির জন্য যদি ক্যাম্পাসের ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে, তবে এর দায়ভার ছাত্রলীগকেই নিতে হবে।

যা বললেন তাঁরা
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, গত চার পাঁচ মাসে ক্যাম্পাসে ঘটা একটি ঘটনারও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করলে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আর একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্বিকার রেখে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তবে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার জন্য সভাপতিকেই দায়ী করেছেন ভিএক্স পক্ষের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সভাপতির অনুসারীরা তাঁদের নেতা-কর্মীকে কোনো কারণ ছাড়া মারধর করেছে। এই কারণে তাঁরা মামলা করেছেন।

ঘটনা ঘটা মাত্র জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ঝামেলা বাড়ত না বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, যাঁরা একে অন্যের ওপর হামলা করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো সমস্যার সমাধান হবে না।