দুর্নীতির অভিযোগে ভিপি নুরুলের কক্ষে তালা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হকের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে।  ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হকের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ তুলে গতকাল বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডাকসু ভবনে তাঁর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এর আগে ভিপি নুরুলের পদত্যাগ ও তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ডাকসু ভবনের সামনে মানববন্ধন করে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। পরে বিকেল পাঁচটার পর নেতা-কর্মীদের নিয়ে তালা ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করেন নুরুল হক।

গত মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে নুরুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে দুজন ব্যক্তির কথোপকথনের অডিও প্রচারিত হয়। সেই অডিও ক্লিপে নুরুল হককে এক ব্যক্তির কাছে ব্যাংক গ্যারান্টি করতে সহযোগিতা চাইতে শোনা যায়। শেষে আরেক ব্যক্তির পক্ষ থেকে তাঁকে আর্থিক সহায়তার কথা বলা হয়। এ জন্য মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশ ভিপি নুরুলকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে আখ্যা দেয়।

অডিও ক্লিপটির বক্তব্য নিজের বলে জানিয়েছেন ভিপি নুরুল হক। তবে ফোনালাপের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে বিকৃতভাবে খবর প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ একটি অংশ কেটে প্রচার করা হয়েছে। এই ‘মিথ্যা’ অভিযোগ কেউ প্রমাণ করতে পারলে ডাকসু থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন বলে জানান তিনি। কথোপকথন বিকৃতভাবে প্রচারের জন্য দুটি টিভি চ্যানেল ও একটি পত্রিকার বিরুদ্ধে তিনি মানহানির মামলা করবেন বলেও জানান।

ভিপি নুরুলের কক্ষে তালা দেওয়ার আগে মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন বলেন, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত—এ ধরনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও ডাকসুর ঐতিহ্য ক্ষুণ্ন করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা করেছেন। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মুহূর্তও তাঁর ঠাঁই হতে পারে না।

ফোনালাপের প্রথম অংশের বিষয়ে নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এক আত্মীয় পটুয়াখালীতে মডেল মসজিদ নির্মাণে ১৩ কোটি টাকার একটি কাজ পেয়েছেন। তিনি আমাকে ফোন করে ঠিকাদারির লাইসেন্স আছে, পরিচিত এমন কারও মাধ্যমে ব্যাংক গ্যারান্টি করে রাখার অনুরোধ করেন। আমি আমার পরিচিত এক ঠিকাদারকে ফোন করে জানতে চাই, তিনি গ্যারান্টার হতে পারবেন কি না। এটুকুই ছিল কথা। কিন্তু অডিও ক্লিপটিতে ফোনালাপের আংশিক তুলে ধরা হয়েছে।’

দ্বিতীয় অংশটির বিষয়ে নুরুল হক বলেন, ‘একজন ব্যক্তি আমাকে ফোন করে বলেন যে তিনি আমাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করতে চান। তিনি আমার নাম, ই-মেইল ইত্যাদি চান৷ সেখানে আমার কোনো উত্তর ছিল না। কোনো মানুষ যদি আমাকে ফোন দিয়ে বলেন যে আমাদের সাহায্য করতে চান, তা তো অপরাধ নয়।’