শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে অনিয়ম, তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

হবিগঞ্জের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে সাড়ে ১৫ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও আসবাবপত্র কেনায় অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করতে মাঠে নেমেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আজম খান শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে যান।

শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি। হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার নতুন ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কলেজটির অস্থায়ী ক্যাম্পাস। বর্তমানে শিক্ষার্থী ১৫০ জন। কলেজ সূত্রে জানা গেছে, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কম্পিউটার, আসবাব, মেডিকেল সরঞ্জামাদি কেনার জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। দরপত্রের মাধ্যমে এ কাজ পায় ঢাকার নির্ঝরা এন্টারপ্রাইজ ও পুনম ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।

কলেজ কর্তৃপক্ষ ৫১৮ ধরনের মালামাল কেনে। এতে ভ্যাটসহ মোট খরচ দেখানো হয় ১৫ কোটি ৪৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। পরে অভিযোগ ওঠে, ৪২ হাজার টাকার ল্যাপটপ কেনা হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকায়। ৬০ হাজার টাকার কালার প্রিন্টারের দাম পড়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ৩৯ হাজার টাকার রেফ্রিজারেটর ৮৫ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। এমনকি মানবদেহের মেডিকেল চার্ট, বাজারে যার দাম ৫০০ টাকা, তা কেনা হয়েছে ৭ হাজার টাকায়। এ নিয়ে গত রোববার সাড়ে ‘১৫ কোটি টাকার কেনায় বড় অনিয়ম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দৈনিক প্রথম আলোয়।

বিষয়টি তদন্ত করতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের যুগ্ম সচিব (নির্মাণ ও মেরামত অধিশাখা) মো. আজম খান শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে যান। তিনি বেলা তিনটা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন। তিনি আসবেন বলে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ সদর থানার পুলিশ দিয়ে পুরো কলেজ এলাকা ঘিরে রাখেন।

মন্ত্রণালয়ের তদন্তের বিষয়টি খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা মেডিকেল কলেজে গেলে পুলিশ কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। যুগ্ম সচিব মো. আজম খানকে বিষয়টি জানালে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের দুপুর ১২টার দিকে কিছুক্ষণের জন্য কলেজের ভেতরে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। গণমাধ্যমকর্মীরা ভেতরে গিয়ে দেখতে পান, যুগ্ম সচিব কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে দরপত্রসংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করছেন। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ আবু সুফিয়ান এবং দরপত্র প্রস্তাব ও মূল্যায়ন কমিটি সদস্যসচিব ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক নাসিমা খানমসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

যুগ্ম সচিব আজম খান বলেন, মাত্র তদন্তকাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ মুহূর্তে কিছু বলা যাবে না। তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া ১৫ দিন সময়ের আগেই প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।