সিদ্ধেশ্বরী থেকে উদ্ধার হওয়া লাশটি পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ের

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকার রাস্তা থেকে বুধবার মধ্যরাতে উদ্ধার হওয়া লাশের পরিচয় মিলেছে। তাঁর নাম রুবাইয়াত শারমিন ওরফে রুম্পা (২০)। তিনি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের (স্নাতক) ছাত্রী ছিলেন। তাঁর বাবা রোকনউদ্দিন হবিগঞ্জের একটি ফাঁড়িতে পুলিশ পরিদর্শক পদে কর্মরত।

বৃহস্পতিবার রাতে স্বজনেরা রমনা থানায় তোলা ছবি দেখে তরুণীর লাশ শনাক্ত করেন। পুলিশ বলছে, তরুণীকে সিদ্ধেশ্বরীর কোনো ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ধারণা করা হচ্ছে, ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।


বুধবার মধ্যরাতে পুলিশ ৬৮ সিদ্ধেশ্বরীর সামনের রাস্তা থেকে অজ্ঞাত ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। এর আগে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, তরুণীর মেরুদণ্ড, বাঁ হাতের কনুই ও ডান পায়ের গোড়ালি ভাঙা। মাথা, নাক, মুখে জখম এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। বুকের ডান দিকে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে বৃহস্পতিবার শারমিনের লাশের ময়নাতদন্ত হয়। কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, লাশের শরীরের আঘাত দেখে মনে হয়েছে ওপর থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, শারমিন সপরিবার ২৫৫ শান্তিবাগে থাকতেন। এক ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি বড় ছিলেন। তাঁর বাবা রোকনউদ্দিন হবিগঞ্জের একটি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক। শারমিন দুটি টিউশনি করে বুধবার সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন। পরে তিনি কাজ আছে বলে বাসা থেকে বের হন। বাসা থেকে নিচে নেমে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন ও পরা স্যান্ডেল বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে এক জোড়া পুরোনো স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে তিনি বেরিয়ে যান। কিন্তু রাতে আর বাসায় ফিরে আসেননি। স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। আজ খবর পেয়ে শারমিনের মাসহ স্বজনেরা রমনা থানায় গিয়ে লাশের ছবি দেখে শারমিনকে শনাক্ত করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। পরিচয় যখন পাওয়া গেছে, শিগগিরই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা যাবে।

বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাতে শারমিনের বাবাকে মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়ের মৃত্যুর খবর তাঁকে জানানো হয়নি।

আরও পড়ুন: