'৯০ এর আগে-পরের সব শাসককেই স্বৈরাচার বলা হয়েছে: জি এম কাদের

জি এম কাদের। ফাইল ছবি
জি এম কাদের। ফাইল ছবি

জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ১৯৯০ সালের আগে ও পরে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেছে তাদের সবাইকেই স্বৈরাচার বলা হয়েছে। কাদের বলেছেন, সরকার প্রধান সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র বিন্দু থাকায় দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অর্জিত হচ্ছে না।

‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় জিএম কাদের এ কথা বলেন। আজ শুক্রবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে এর আয়োজন করা হয়। 

১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার–বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে এইচ এম এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। পতন হয় এরশাদের নয় বছরের শাসন আমলের। এরপর থেকে জাতীয় পার্টি এ দিনকে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে।

আজকের সভায় জিএম কাদের বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রকৃত গণতন্ত্রের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এ সংবিধান অনুযায়ী সরকার প্রধান সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র বিন্দু থাকেন। যে কারণে, দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারা অর্জিত হচ্ছে না। আর এ কারণেই আগে ও পরে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন তাদের সবাইকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে। তবে জাপা চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সবাই মিলে দোষ দিয়েছেন এরশাদকে, যা অন্যায়।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সংবিধানের ৭০ ধারা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি বা বিবেচনার ওপরে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। দলের সঙ্গেই তাদের থাকতে হবে, দলের বাইরে তারা যেতে পারেন না। সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের আসল কেন্দ্রবিন্দু করা সংবিধান ‘অ্যালাউ’ করে না এবং সংসদের কাছে মন্ত্রীদের জবাবদিহিও এ দেশের সংবিধান ‘অ্যালাউ’ করে না। সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করতে পারেন না।

যদি সংবিধানের ৭০ ধারা উঠিয়ে দেওয়া হয় এবং সাংসদেরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে তাহলে সরকারের স্থায়ীত্ব কম হবে বলে উল্লেখ করেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, এতে প্রতি মাসেও সরকার পরিবর্তন হতে পারে, কোনো বিল পাস করতেও সমস্যা হবে সরকারের। এমন আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে পূর্ণ গণতন্ত্র চর্চার জন্য উপযুক্ত কিনা তাও বিবেচনা করতে হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আর্থসামাজিক অবস্থার কারণে যে কোন রাজনৈতিক দল প্রকৃত গণতান্ত্রিক চর্চা করতে পারে না। তিনি জানান, জাতীয় পার্টি সংবিধান সংরক্ষণ করতে কাজ করে যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস.এম. ফয়সাল চিশতী সভায় সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ, সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন প্রমুখ।