যৌতুকের দাবিতে নড়াইলে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

যৌতুকের দাবিতে নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় তামান্না বেগম নামের এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
যৌতুকের দাবিতে নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় তামান্না বেগম নামের এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

যৌতুকের দাবিতে নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মগোপনে আছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের পারবিঞ্চুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীর নাম তামান্না বেগম (২২)। তাঁর বাবার বাড়ি কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের খড়ড়িয়া গ্রামে।

আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, তামান্নার শ্বশুরবাড়িতে অনেক মানুষের ভিড়। কিন্তু ওই বাড়ির কেউ ছিল না। প্রতিবেশী নারীদের দাবি, তামান্নার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।

তামান্নার বাবার নাম আক্তার মোল্লা। তিনি বলেন, গতকাল রাত ১২টার দিকে পারবিঞ্চুপুর এলাকার লোকজন তাঁকে ফোনে জানান যে তাঁর মেয়েকে মেরে রেখে পরিবারের সবাই পালিয়েছেন। খবর পেয়ে তিনি ছুটে আসেন। মেয়ের বাড়ি গিয়ে দেখেন খাটের ওপর মেয়ে শুয়ে আছে। পাশে দেড় বছরের নাতনি কান্নাকাটি করছে। তিনি বলেন, জামাতা শিপন এলাকায় ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। সম্প্রতি তিনি বিদেশ যাওয়ার চিন্তা করেন। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি তামান্নাকে তাঁর (বাবার) কাছ থেকে চার লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি টাকা দিতে না পারায় তাঁর মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই মারধর করতেন।

আক্তার মোল্লা আরও বলেন, ‘মেয়ে ফোন করে আমাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ওকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলত। কেঁদে কেঁদে বলত, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওকে মেরে ফেলবে। তাই সত্যি হলো। এখন আমার নাতনির কী হবে? আমি এর বিচার চাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারজন প্রতিবেশী নারী বলেন, টাকার জন্য মেয়েটিকে প্রায়ই শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী মারধর করতেন। তাঁরা তামান্নাকে মারধর না করার জন্য কয়েকবার বলেছেন। কিন্তু তাঁরা কথা শোনেননি।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তামান্নার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু হয়েছে। তাঁরা পলাতক আছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখনো থানায় অভিযোগ করা হয়নি।