বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ১৪৪ ধারা জারি

বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। বরুড়া, কুমিল্লা, ৭ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। বরুড়া, কুমিল্লা, ৭ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টায় সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরী ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম একই স্থানে, একই সময়ে সম্মেলন ডাকায় উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। পরে দুই পক্ষই ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ‘ঝটিকা’ সম্মেলন করে। এতে দুই পক্ষই আংশিক কমিটি গঠন করে।

এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আজ সকালে সাংসদের প্যান্ডেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে একটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। একই সঙ্গে অনেক চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষে রয়েছেন কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাছিমুল আলম চৌধুরী। অপর পক্ষে রয়েছেন বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ এন এম মইনুল ইসলাম। দুই পক্ষই একই সময়ে বরুড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে সম্মেলন ডাকলে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আজ সকাল নয়টায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুসারীরা ঈদগাহ মাঠে সাংসদের অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে প্যান্ডেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় একটি মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, অনেকগুলো চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে সকাল সাড়ে নয়টায় বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিসুল ইসলাম বরুড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে সাংসদ নাছিমুলের নেতৃত্বে বরুড়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এক পক্ষের কমিটি গঠন করা হয়। আর বরুড়া মধ্যবাজার বাসস্ট্যান্ডে চেয়ারম্যান মইনুলের নেতৃত্বে আরেক পক্ষের সম্মেলন হয়।

জানতে চাইলে বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি সম্মেলন করতে হলে সাধারণ সভা করতে হয়। কাউন্সিলর ঠিক করতে হয়। প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে আমন্ত্রণ জানাতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি। জেলার নেতৃবৃন্দও সম্মেলন সম্পর্কে জানেন না, আমরাও জানি না। কাউকে অতিথি না রেখে একতরফা সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন সাংসদ। সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও গঠনতন্ত্রবিরোধী ওই সম্মেলন প্রতিহত করার জন্য আমার অনুসারীরা পাল্টা সম্মেলন ঘোষণা করে কমিটি করেছে।’

সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সব ইউনিয়ন সম্মেলন করার পর উপজেলা সম্মেলনের ডাক দিয়েছি। ওরা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্যান্ডেলে আগুন দেয়। এই অন্যায়ের জন্য আওয়ামী লীগের মানুষের কাছে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। প্রশাসনের অনুরোধে আমরা সরে এসেছি। দলের সব নেতা–কর্মীরা আমার সঙ্গে আছে।’

বরুড়ার ইউএনও মো. আনিসুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষ একই স্থানে একই সময়ে সম্মেলন ডাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।