জন আকাঙ্ক্ষায় যুক্ত হলেন সাবেক সচিব সোলায়মান চৌধুরী

চট্টগ্রামে ‘জন আকাঙ্ক্ষা’ আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা
চট্টগ্রামে ‘জন আকাঙ্ক্ষা’ আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা

জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়া নেতা–কর্মীদের রাজনৈতিক সংগঠন ‘জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’–এর সঙ্গে যুক্ত হলেন সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী। আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামে ‘জন আকাঙ্ক্ষা’ আয়োজিত ‘একটি ইনক্লুসিভ, গণতান্ত্রিক দলের কর্মসূচি, গঠনতন্ত্র ও ইশতেহার কেমন হওয়া উচিত’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

সোলায়মান চৌধুরী কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনার। সংবিধান নাগরিকের যে অধিকার দিয়েছে, তা আমরা ভুলতে বসেছি। যে অধিকার আমাদের এমনিতে ভোগ করার কথা, তা ঘুষ দিয়ে কিংবা মামা-চাচার তদবির দিয়ে অর্জন করতে হয়। এটা স্বাধীনতার চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফ—এই তিনটি মূলনীতির ভিত্তিতে, যা আমরা ভুলতে বসেছিলাম। এই প্রজন্মকে নতুন করে সে অঙ্গীকারে উদ্বুদ্ধ করতে জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ কাজ করবে।’

হঠাৎ করে জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশের কর্মশালায় প্রধান অতিথি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সোলায়মান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জন আকাঙ্ক্ষা এখনো রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়নি। তারা এখন জনগণের আকাঙ্ক্ষা বোঝার চেষ্টা করছে। আমি তাদের এই উদ্যোগকে সমর্থন করি।’

এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ফেনীর জেলা প্রশাসক ছিলেন। তখন সন্ত্রাসের গডফাদার হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংসদ জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আলোচিত হন। সে সময় জয়নাল হাজারী ভারতে চলে যান। সোলায়মান চৌধুরী পরে সচিব হন। এক-এগারোর সরকারের সময় তিনি সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। অবসরে গিয়ে তিনি ২০১৪ সালে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীও ছিলেন। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ২০-দলীয় জোটের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জন আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মজিবুর রহমান মনজু বলেন, জন আকাঙ্ক্ষা একটি নতুন ধারার রাজনীতির উত্থান ঘটাতে চায়। যার নাম সর্বজনীন, আদর্শবাদী, গণতান্ত্রিক ধারা। এই ধারা জনগণের আগ্রহ ও উপদেশ গ্রহণ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নতুন করে রাজনীতির পথ নির্মাণ করতে চাই। কারণ, আমরা আর বিষাক্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে অপারগ। যানজটে জনজীবন অতিষ্ঠ, তারপরও মন্ত্রীরা রাস্তা আটকে দিয়ে চলাচল করেন, তা আমরা আর মানতে রাজি নই।’ তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে তৃণমূলের পরামর্শ নিয়ে কর্মসূচি প্রণয়ন করার কাজ চলছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারি, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মেজর (অব.) আবদুল ওহাব, আইনজীবী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন আইনজীবী আবদুল কাশেম, ব্যাংকার দিদারুল আলম, প্রকৌশলী নাঈম হাসান, সাংবাদিক রিমন বড়ুয়া, ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম, নারী উন্নয়ন কর্মী উজমা বুশরা প্রমুখ।