তেঁতুলিয়ায় দ্রুত কমছে তাপমাত্রা

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাতভর ঝিরিঝিরি করে বইছে উত্তরের হিমেল বাতাস। কমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। তবে তেমন দেখা নেই কুয়াশার। এদিকে ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে প্রায় স্বচ্ছ নীল আকাশে মিলছে ঝলমলে রোদের দেখা। এরপরও হিমেল বাতাসের প্রভাবে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা এখন দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম।

গতকাল শনিবার সকালে (সকাল ৯টা) তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের মধ্যে এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানান আবহাওয়াবিদেরা। এভাবেই পঞ্চগড়ে জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। প্রতিদিন বিকেল হতেই হিমেল বাতাসে ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করে তাপমাত্রা। তবে দিনের তুলনায় রাতে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। উষ্ণতা যা মিলছে, তা দুপুরের পর খানিক সময়ের জন্যই। ওই সময়ে ঝলমলে রোদের দেখা মিলছে। 

গত বৃহস্পতিবার সকালে তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার সকালেও তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বাতাস কম হলে কুয়াশার পরিমাণ বাড়ে। এতে তাপমাত্রাও বেশি থাকে। আর উত্তরের হিমেল বাতাস থাকলে কুয়াশার পরিমাণ কমে যায়। এতে রাত যত গভীর হয়, ততই বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা এবং কমে যায় তাপমাত্রা। তখন দিনের ঝলমলে রোদও হিমেল বাতাসের কারণে খুব বেশি উষ্ণতার সৃষ্টি করতে পারে না।

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় সেদিক থেকেই আসছে এই হিমেল বাতাস। এ জন্য অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেক আগেই শীত নামে পঞ্চগড়ে। এ ছাড়া অন্যান্য জেলার তুলনায় শীতের তীব্রতাও এখানে বেশি থাকে। শীতের স্থায়িত্বও থাকে বেশি দিন।

পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন মো. নিজাম উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, দিনের বেলা রোদের উষ্ণতা আর রাতে ঠান্ডা বাতাসে শীতের তীব্রতা—এ ধরনের আবহাওয়ায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যত্নশীল হতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাতে ঘর থেকে বের না হওয়াই ভালো। তাপমাত্রা খুব কমে গেলে পর্যাপ্ত গরম কাপড়ে শিশু ও বৃদ্ধদের জড়িয়ে রাখতে হবে। তিনি বলেন, এ ধরনের আবহাওয়ায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরেই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা অনেকটা ওঠানামা করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, এ মাসে (ডিসেম্বর) ক্রমান্বয়ে রাতের তাপমাত্রা কমবে এবং এ মাসের শেষের দিকে দুই থেকে তিনটি মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

তিনি আরও জানান, দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেটি ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি এই তেঁতুলিয়াতেই রেকর্ড করা হয়। তার আগে ১৯৬৮ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। ফলে তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা যেভাবে কমতে শুরু করেছে, সেটি কত দূর নামে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।