বরিশাল নগর আ.লীগের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর-সাদিক আবদুল্লাহ

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয় আজ রোববার। ছবিটি নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যান থেকে তোলা। ছবি: সাইয়ান
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয় আজ রোববার। ছবিটি নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যান থেকে তোলা। ছবি: সাইয়ান

বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আজ রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেলে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জাহাঙ্গীরকে সভাপতি এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। দুটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ভোটাভুটি ছাড়াই এই কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

এর আগে বেলা ১১টায় নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হলে সাচ্চা নেতা-কর্মী লাগবে। ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে হলে শেখ হাসিনাকে বারবার প্রধানমন্ত্রী দরকার। এ জন্য আমাদের অতিথি পাখি, মৌসুমি পাখির দরকার নেই। আমাদের যা আছে, তা-ই যথেষ্ট।’

আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনাকে ২০ বার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। শেখ হাসিনা আজ জীবিত আছেন বলেই দেশের মানুষ তিনবেলা পেটভরে ভাত খেতে পারছে, দেশ সারা বিশ্বে এগিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে জাতি হিসেবে বাঙালি আত্মমর্যাদাশীল জাতিতে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা এখন সারা বিশ্বের সৎ, সাহসী, দক্ষ, দেশপ্রেমিক দেশনেতা। তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে কোনো সরকার নজর দেয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দক্ষিণাঞ্চলে পায়রা বন্দর, পদ্মা সেতুসহ সব ধরনের উন্নয়ন সাধন করে দক্ষিণাঞ্চলকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত করেছে।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ সাংসদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

এতে সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী। প্রথম অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন পেশ করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জাহাঙ্গীর।

প্রথম অধিবেশন চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত। এরপর মধ্যাহ্নবিরতি শেষে বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন হয়। এতে বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের ৩০টি ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও নগর কমিটির ৩৭১ জন কাউন্সিলর যোগ দেন।

দলীয় সূত্র জানায়, সভাপতি পদে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জাহাঙ্গীর প্রার্থী হন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে একমাত্র প্রার্থী হন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। পরে গোলাম আব্বাস চৌধুরী সভাপতি পদে তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর এ কে এম জাহাঙ্গীরকে সভাপতি এবং একমাত্র প্রার্থী হিসেবে সাদিক আবদুল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।

দলীয় সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর সর্বশেষ বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ সভাপতি ও আফজালুল করিম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই সম্মেলনের চার বছর পর ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর গোলাম আব্বাস চৌধুরীকে সভাপতি ও এ কে এম জাহাঙ্গীরকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। গত ১৯ অক্টোবর নগর আওয়ামী লীগের এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। সে হিসাবে টানা সাত বছর পরে বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। এর আগে বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করা হয়।