তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করেছে

শীতে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন চারদিক। ভোরে হালের গরু নিয়ে জমি চাষ করছেন এক কৃষক। গতকাল পাবনার ঈশ্বরদীর পিয়ারাখালী গ্রামে।  হাসান মাহমুদ
শীতে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন চারদিক। ভোরে হালের গরু নিয়ে জমি চাষ করছেন এক কৃষক। গতকাল পাবনার ঈশ্বরদীর পিয়ারাখালী গ্রামে। হাসান মাহমুদ

ঋতুচক্রের হিসাবে পৌষ আসতে আর মাত্র কদিন বাকি। ভোরে হালকা শীতের আমেজ ছাড়া শহরে শীত নামার আর কোনো লক্ষণ নেই। তবে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এবার প্রকৃতিতে ঠিক সময়ে শীত নামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। মানে পৌষ মাস এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করেছে। তবে অন্য সব জেলাকে পেছনে ফেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আগেভাগেই শীত জেঁকে বসেছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, সামনের সপ্তাহের শুরু থেকে সারা দেশে শীত জেঁকে বসবে। চলতি মাসের শেষের দিকে দেশের এক থেকে দুটি স্থানে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শীতের দাপট বরাবরের মতো এবারও বেশি থাকতে পারে।

পঞ্চগড়ে প্রতিদিন বিকেল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর থেকে হিমেল বাতাস আসতে শুরু করে, আর কমতে থাকে তাপমাত্রা। তবে দিনের তুলনায় রাতে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ঝলমলে রোদের কারণে দিনের বেলা কিছুটা উষ্ণতা মেলে।

জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এখন থেকে তাপমাত্রা অল্প অল্প করে কমতে থাকবে। সামনের সপ্তাহের শুরু থেকে শীত বাড়বে। মাসের বাকি সময়জুড়ে দেশের কয়েকটি এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

>পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী সপ্তাহ থেকে সারা দেশে শীত জেঁকে বসতে পারে।

দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার শীতের ধরন অবশ্য আলাদা। সেখানে গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ সেখানে তীব্র শীত বিরাজ করছে। সেই তুলনায় উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।

একই অঞ্চলে দুই ধরনের তাপমাত্রার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, তেঁতুলিয়া হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে তাপমাত্রা দ্রুত এবং বেশি কমে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে অন্য এলাকাগুলোর তাপমাত্রাও ধীরে ধীরে কমতে পারে। সাধারণত উত্তরাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট, সিলেট, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে আসে। তবে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে পুরো শীতের মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে খুব একটা নামে না। যে কারণে এই দুই বড় শহরে তীব্র শীতের অনুভূতি খুব কমই পাওয়া যায়। 

চট্টগ্রাম বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায় তাপমাত্রা প্রায় গ্রীষ্মের কাছাকাছি পর্যায়ে রয়ে গেছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার থেকে শুরু করে নোয়াখালী পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল ২৮ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ থেকে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে।

আজ সোমবারের জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা গতকাল রোববারের মতোই অর্থাৎ অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে আসতে পারে। আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।