সেতুর ওপর থেকে স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি

দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা ছিল না। পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। গত শনিবার সন্ধ্যার পর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা(৩৫)কে নিয়ে জুরাইন এলাকায় মার্কেটে বেড়াতে যান মো. রিপন। রাত ১১টার দিকে সুযোগ বুঝে তাঁকে পোস্তগোলার কাছে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর মাঝামাঝি এলাকায় নিয়ে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেন।

এ দৃশ্য আশপাশের কয়েকজন দেখে হাতেনাতে রিপনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এরপর রিপন জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এসব জানান।

গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ মোকামপাড়া এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় কানিজের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। বিকেলে রিপন ঢাকা জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত রিপনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

নিহত কানিজ ফাতেমার বাড়ি রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া থানার ৬০/৬১ মিলব্যারাক কেবি রোড এলাকায়। তাঁর বাবা মারা গেছেন। কানিজ বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন।

কানিজের বোন রিফাত ফাতেমার ভাষ্য, ‘২০০৭ সালে আমার বোনের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা রিপনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বোনকে নিয়ে কেবি রোডের ওই বাড়িতেই থাকতেন তারা। তাঁদের সন্তান ছিল না। এ ছাড়া রিপন বেকার ও মাদকাসক্ত ছিল। মাদক কেনার টাকা নিয়ে প্রায়ই আমার বোনের সঙ্গে রিপনের ঝগড়া হতো, মারধর করতে। একপর্যায়ে তা চরম আকার ধারণ করে।’

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, স্ত্রীকে সেতু থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনাটি আশপাশের লোকজন দেখে ফেলে। তখন লোকজন রিপনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে রিপনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর রিপনের স্ত্রীর সন্ধানে সারা রাত বুড়িগঙ্গায় উদ্ধার অভিযান চলে। পরদিন সকালে ফাতেমার লাশ ভেসে উঠে। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে নিহতের স্বামী রিপন মাদকাসক্ত ও বেকার। এ ঘটনায় নিহত কানিজের ছোট বোন রিফাত ফাতেমা বাদী হয়ে রিপনকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। রিপন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।