খামারিকে খুন করে লুট করা গরু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৮

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহী শহরে এক খামারিকে খুন করে লুট করা গরু উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে তিনজন সরাসরি চুরি ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত। সোমবার সকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সাজিদ হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।

প্রেস ব্রিফিংয়ে সাজিদ হোসেন জানান, গরু চুরির ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত। চোরদের উদ্দেশ্য ছিল নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে মালিককে অচেতন করে গরু চুরি করা। কিন্তু এই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় মালিককে খুন করে গরু চুরি করা হয়। পরে সেগুলো বিক্রিও করা হয়।

গত বুধবার দিবাগত রাতে রাজশাহীর দাশপুকুর মোড়ে খুন হন আবদুল মজিদ (৬০)। ওই এলাকায়ই তাঁর গরুর খামার ছিল। খুন করার পর তাঁর খামারের চারটি গরু লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা হয়। এরপর পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করে। এঁরা হলেন নগরের বহরমপুর এলাকার হামিদুর রহমান ওরফে খামার বাবু (৩৫), মো. মিলন (৩৪) ও মো. জিন্দার (৪৮), দাশপুকুর এলাকার আরিফুল ইসলাম (২৮), হড়গ্রাম নতুনপাড়া এলাকার রবিউল ইসলাম (৩৮), পবা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের আবুল কাশেম (৪১), আবদুস সামাদ (৫০) ও আশুরা বেগম (৪৮)।

এঁদের মধ্যে আবুল কাশেম স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য। তাঁর বাড়ি থেকেই গরুগুলো উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ বলছে, কাশেমের ভাই মকবুল গরুচোর সিন্ডিকেটের সদস্য। তাঁকে ধরা না গেলেও তাঁর স্ত্রী আশুরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর কাশেমের বাড়িতে চোরাই গরু দেখাশোনা করতেন আবদুস সামাদ।

উপকমিশনার সাজিদ হোসেন জানান, জিন্দার ও মিলন নিহত মজিদের খড়ির দোকানে কাজ করতেন। তাঁরাই মূলত আরিফুলকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার চার দিন আগে মজিদের গরু চুরির পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন তাঁরা মজিদকে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে অচেতন করে গরু নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু মজিদ অচেতন না হওয়ায় মিলন ও জিন্দার মজিদকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন। এতেও মৃত্যু না হলে আরিফুল গলায় মাফলার জড়িয়ে মজিদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর রবিউলের ভটভটিতে করে গরু পৌঁছে দেওয়া হয় মকবুলের কাছে। মকবুল সেগুলো তাঁর ভাই কাশেমের বাড়িতে রাখেন।

পুলিশ জানায়, গত শনিবার প্রথমে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিনই গরু উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া তিনজনকে রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। সবাইকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।