আরদিনার কৃতিত্বে ভাই, মায়ের চোখে আনন্দাশ্রু

আরদিনা ফেরদৌস
আরদিনা ফেরদৌস

এসএ গেমসে ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে নেপালের কাঠমান্ডুর সাতদোবাটো শুটিং কমপ্লেক্সে রুপা জিতেছেন কুষ্টিয়ার মেয়ে আরদিনা ফেরদৌস। পিস্তলে মেয়েদের একক ইভেন্টে রুপা জিতে এরই মধ্যে একটা ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন আরদিনা।

বাংলাদেশের কোনো মেয়ে প্রথমবার দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে পিস্তলের এককে জিতলেন পদক। এই খুশিতে চোখে আনন্দাশ্রু মা রেজিনা জেসমিন ও ভাই গোলাম মঈন উদ্দিনের। গত শুক্রবার বিকেলে শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার বাড়িতে গেলে তাঁদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এ সময় মা ও ভাইয়ের সঙ্গে সরাসরি মুঠোফোনে কথা বলেন আরদিনা। কাঠমান্ডুতে থাকা প্রথম আলোর প্রতিবেদক বদিউজ্জামানের সঙ্গে কুষ্টিয়া প্রতিনিধি তৌহিদী হাসানের মুঠোফোনের ফেসবুকে তাঁদের কয়েক মিনিটের ভিডিও কলে কথা হয়।

মাকে দেখে আনন্দে আত্মহারা আরদিনা। এ সময় তিনি মাকে পদক দেখিয়ে বললেন, ‘মা, আমি পদক পেয়েছি।’ এরপর বাংলাদেশের পতাকা গায়ে জড়িয়ে ধরেন তিনি। এই প্রান্তে মায়ের পাশের দাঁড়িয়ে ছিলেন ভাই গোলাম মঈন উদ্দিন। মা ও ভাই দুজনের মনে আনন্দ বইতে থাকে।

কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী শুটিং পরিবার থেকে উঠে এসেছেন আরদিনা। তিনি কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকের পর ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ শেষ করেছেন। বাবা গোলাম মহিউদ্দিন, মা রেজিনা জেসমিন। তিন ভাইবোনের মধ্যে আরদিনা সবার ছোট। বড় বোন মদিনা ফেরদৌস, এরপর ভাই গোলাম মঈন উদ্দিন। পরিবারের পাঁচ সদস্যই শুটার।

২০০৮ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রথম পিস্তল হাতে নেন আরদিনা। নানা আমজাদ হোসেন ছিলেন কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের সদস্য। বাবা, মা, ভাইবোন—সবাই শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন একসময়। ২০১০ সালে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের শুটিং প্রতিযোগিতা হয়েছিল কুষ্টিয়ায়। সে সময় মা, ভাইসহ আরদিনা পদক জিতেছিলেন।

মেয়ের কৃতিত্বে আত্মহারা মায়ের এখন একটাই স্বপ্ন, মেয়ে যেন অলিম্পিকে সোনা জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে। বোনের কৃতিত্বে আনন্দাশ্রু ছিল ভাই গোলাম মঈন উদ্দিনের চোখে। তিনি চোখ মুছে ঘর থেকে বোনের আরও কিছু পদক দেখিয়ে বললেন, ‘আমাদের সবারই চাওয়া আরদিনা যেন অলিম্পিকে সোনা জেতে।’ বাবা গোলাম মহিউদ্দিন ঢাকায় অবস্থান করছেন। বিকেলে ফোনে তিনি মেয়ের পদক পাওয়ার খবর পেয়েছেন। তিনিও খুশি মেয়ের কৃতিত্বে।

আরদিনা সম্প্রতি বিয়ে করেছেন। স্বামী তানভীর আহসান কুষ্টিয়া শহরেরই ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।