৫ বছরে আইটি খাতে আরও ১০ লাখ কর্মসংস্থান হবে: পলক

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উদ্‌যাপনের জন্য গৃহীত কর্মসূচির ঘোষণা দিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। আইসিটি বিভাগ সম্মেলনকক্ষ, আগারগাঁও, ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর। ছবি: পিআইডি
ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উদ্‌যাপনের জন্য গৃহীত কর্মসূচির ঘোষণা দিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। আইসিটি বিভাগ সম্মেলনকক্ষ, আগারগাঁও, ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর। ছবি: পিআইডি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণার পর দেশে বিগত ১১ বছরে তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) খাতে ১০ লক্ষাধিক তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আইটি খাতের এই সম্প্রসারণের ফলে আগামী পাঁচ বছরে দেশে আরও ১০ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি বিভাগের সম্মেলনকক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০১৯ উদ্‌যাপন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির ঘোষণা দিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জুনাইদ আহমেদ।

‘সত্য–মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে’—প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে তৃতীয়বারের মতো ১২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) যথাযথ মর্যাদায় জেলা-উপজেলাসহ দেশব্যাপী ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০১৯ উদ্‌যাপিত হবে। এ উপলক্ষে সরকারিভাবে এদিন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ১২ ডিসেম্বরকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে উদ্‌যাপনের অনুমোদন দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর ১২ ডিসেম্বর উদ্‌যাপন করা হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর দৃঢ়সংকল্প ও দূরদর্শিতার জন্যই তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশ্বের বুকে আজ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের নাম বাংলাদেশ। ‘আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ তার পরিপূর্ণ রূপ পেয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি বর্তমানে জীবনের অনুষঙ্গ। সাইবার স্পেসে সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে অনেকেই তথ্য আপলোড বা শেয়ার করে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করছেন। এ জন্য ডিজিটাল লিটারেসি ও নৈতিকতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা এবং মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাচাই–বাছাই না করে ইচ্ছেমতো তথ্য ছড়িয়ে গুজব সৃষ্টির হাত থেকে সবাইকে সচেতন করার বিষয়টি মাথায় রেখে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০১৯ উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচি সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম আরশাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, দিবসটি উপলক্ষে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হবে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদসহ আইসিটি বিভাগের সব কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত থাকবেন।

ওই দিন সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে সকাল নয়টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রাটি খামারবাড়ী হয়ে আবার দক্ষিণ প্লাজায় গিয়ে শেষ হবে। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শোভাযাত্রা–পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

বেলা তিনটায় রাজধানীর বসুন্ধরায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে জুনাইদ আহমেদ এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ উপস্থিত থাকবেন।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় শোভাযাত্রা, ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের প্রতিপাদ্যনির্ভর সেমিনার, আলোচনা সভা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আমার দেখা ডিজিটাল বাংলাদেশের ওপর প্রেজেন্টেশন তৈরি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে দিবসটি যথাযথ উদ্‌যাপিত হবে।

এ সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম আরশাদ হোসেন, বাংলাদেশ কলসেন্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওয়াহিদ শরিফসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।