জামায়াত ছাড়লেন সাবেক সচিব সোলায়মান চৌধুরী

জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী।
জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী।

জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে জামায়াতের নতুন আমির শফিকুর রহমানের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠান।

পদত্যাগপত্রে জামায়াতে ইসলামীর সব সাংগঠনিক পদ ও দায়দায়িত্ব থেকেও পদত্যাগের কথা উল্লেখ করেন সোলায়মান চৌধুরী।

সোলায়মান চৌধুরী জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য এবং দলের পেশাজীবীদের সংগঠন জাতীয় পেশাজীবী ফোরামের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। সচিব পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর তিনি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যুক্ত হন।

জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী ছেড়ে সোলায়মান চৌধুরী জামায়াত থেকে বেরিয়ে আসা নেতা-কর্মীদের সংগঠন ‘জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন । গত শনিবার চট্টগ্রামে সংগঠনটির এক রাজনৈতিক কর্মশালায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর তিনি জন আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সুধী সমাবেশেও অংশ নেন।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এ খবর পেয়ে ৫ ডিসেম্বর জামায়াতের নতুন আমির শফিকুর রহমান লোক মারফত সোলায়মান চৌধুরীকে উত্তরার একটি বাসায় ডেকে নিয়ে যান। সেখানে অনেক বিষয়ে দুজনের কথাবার্তা হয়। একপর্যায়ে তাঁকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য করা হয়েছে বলে জানান। ধারণা করা হয়, সোলায়মান চৌধুরীকে জন আকাঙ্ক্ষা থেকে ফেরানোর লক্ষ্যে তাঁকে শুরার সদস্য করা হয়।

এদিকে জন আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সোলায়মান চৌধুরীর সম্পৃক্ততা স্পষ্ট হওয়ার পর থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করে। তাঁকে নিয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নানা আক্রোশ ও সমালোচনামূলক মন্তব্য করেন। এ অবস্থায় জামায়াতের পক্ষ থেকে সোলায়মান চৌধুরীকে পরামর্শ দেওয়া হয় জন আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পর্ক নেই, গণমাধ্যমে এমন বিবৃতি দেওয়ার। কিন্তু তাতে তিনি সম্মত হননি। শেষ পর্যন্ত তিনি জামায়াত থেকেই পদত্যাগ করলেন।

এ বিষয়ে সোলায়মান চৌধুরীর বক্তব্য হচ্ছে, জন আকাঙ্ক্ষা এখনো কোনো রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়নি। অতএব এ রকম পর্যায়ে সেখানকার কোনো বিষয়ে অংশ নিতে কোনো বাধা থাকার কথা নয়। জামায়াতের বড় বড় নেতা অহরহ বিভিন্ন দলের সমাবেশে যান, বক্তব্য রাখেন। তাতে তো গঠনতান্ত্রিক কোনো সমস্যা হয় না। তাঁর বিষয়ে কেন ফেসবুকে ও বিভিন্নভাবে বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে।

এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী ফেনীতে জেলা প্রশাসক থাকা অবস্থায় জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক আলোচিত হন। পরে সংস্থাপনসচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথমে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কুমিল্লার লাকসাম থেকে জামায়াত তাঁকে তাদের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করে।