টিউশনের টাকা বাঁচিয়ে সাড়ে তিন হাজার মাস্ক বিতরণ

সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করছেন ১০ তরুণ। চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: তাসনিম হাসান
সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করছেন ১০ তরুণ। চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: তাসনিম হাসান

১০ বন্ধুর একটি দল। কেউ পড়েন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউ চট্টগ্রাম কলেজে। সবাই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এই ১০ বন্ধু মিলেই করেছেন ব্যতিক্রমী এক কাজ। টিউশনের টাকা বাঁচিয়ে মঙ্গলবার দিনভর চট্টগ্রাম নগরের সাতটি জায়গায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের হাতে তাঁরা মাস্ক তুলে দিয়েছেন। ধুলা ও ধোঁয়া থেকে মানুষকে বাঁচাতে শিক্ষার্থীদের নেওয়া এমন উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে অনেকের।

ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া এই ১০ তরুণ হলেন মুহাম্মদ হোছাইন, সাইফুদ্দিন খালেদ, মাহমুদ মিনহাজ, রবিউল হাসান, তাছনিম জান্নাত, মাহমুদা মেহেরু, ইসতিয়াক হোছাইন, শারমিন আক্তার, আনছারুল ইসলাম ও সুহাইল আজাদ। আজ সকাল আটটা বাজতেই সবাই জড়ো হন নগরের বহদ্দারহাট এলাকায়। সেখানে মানুষের হাতে হাতে বিনা মূল্যে মাস্ক তুলে দেন। এরপর মুরাদপুর এলাকা হয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ এলাকায় মাস্ক বিতরণ করেন তাঁরা। শেষে জাম্বুরি পার্কে মাস্ক বিতরণের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন।

মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে সচেতনতামূলক পোস্টার প্রদর্শন করেন তরুণেরা। চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: তাসনিম হাসান
মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে সচেতনতামূলক পোস্টার প্রদর্শন করেন তরুণেরা। চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় তোলা। ছবি: তাসনিম হাসান

আজ দুপুরে ১০ বন্ধুকে পাওয়া গেল চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। সেখানে তাঁরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে মাস্ক তুলে দিচ্ছিলেন। সঙ্গে মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর লিফলেট বিতরণ করছিলেন। প্রদর্শন করছিলেন সচেতনতামূলক পোস্টারও। প্রথম আলোকে তাঁরা জানান, তাঁরা সবাই পূর্বপরিচিত। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘স্বপ্নতরী’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ফেসবুকে পেজ খুলে প্রচারণা চালান। শীত মৌসুমে ধুলাবালুর মাধ্যমে বিষাক্ত জীবাণু ছড়ায়। সেই জীবাণু থেকে মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে তাঁরা মাস্ক বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, মাস্ক ও লিফলেটের পেছনে ব্যয় হওয়া অর্থের বেশির ভাগই এসেছে তাঁদের টিউশনির টাকা থেকে। এর সঙ্গে পরিচিত অনেকেও তাঁদের সহায়তা দিয়েছেন। শুধু মাস্ক বিতরণ নয়, আরও নানা সামাজিক কাজ করার কর্মসূচি করে যেতে চান তাঁরা।