প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে ৩ দিনের জন্য শ্রমিকদের অনশন স্থগিত

অনশন ভেঙে মন খারাপ করে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন পাটকলশ্রমিকেরা। প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস এলাকা থেকে ছবিটি তোলা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
অনশন ভেঙে মন খারাপ করে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন পাটকলশ্রমিকেরা। প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস এলাকা থেকে ছবিটি তোলা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আশ্বাসে তিন দিনের জন্য আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন খুলনার পাটকলশ্রমিকেরা। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে একে একে খুলনার বিভিন্ন পাটকলের শ্রমিকেরা ঘরে ফিরে যান।

গতকাল রাতে শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এ সময় তিনি ১৫ ডিসেম্বর শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা এবং বিকেলে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) সভাকক্ষে শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে সভা করার কথা জানান। ওই সভা থেকে ভালো ফলাফল আসতে পারে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকনেতাদের অনশন তুলে নিয়ে ঘরে ফিরে যেতে বলেন।

ওই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দিনের জন্য অনশন স্থগিত করেছেন শ্রমিকেরা। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাতভর শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমিকনেতাদের দফায় দফায় আলোচনা চলে। এ সময় নেতারা চাইলেও শ্রমিকেরা অনশন ভঙ্গ করতে নারাজ ছিলেন। অবশেষে রাত একটার দিকে প্রথমে খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকেরা অনশনস্থল ত্যাগ করেন। পরে দেড়টার দিকে প্লাটিনাম, স্টার ও দৌলতপুর জুট মিলের শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেন। ওই তিন পাটকলের শ্রমিকেরা একই জায়গায় অবস্থান করছিলেন।

রাত আড়াইটার দিকে ক্রিসেন্ট জুট মিলের নেতারা তাঁদের শ্রমিকদের বুঝিয়ে ঘরে ফেরাতে সক্ষম হন। এর মধ্য দিয়ে রাত তিনটার মধ্যে খুলনা নগরের খালিশপুরের বিআইডিসি সড়কে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি পাটকলের শ্রমিকদের অনশন স্থল ফাঁকা হয়ে যায়।

মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, পাট খাতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ব্যবস্থা বাতিল, পাট খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়াসহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছিলেন খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকেরা। গত ১০ ডিসেম্বর বেলা তিনটা থেকে শুরু ওই শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দেননি শুধু যশোরের কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকেরা। টানা অনশন কর্মসূচি পালন করায় বিভিন্ন মিলের প্রায় ২০০ শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবদুস সাত্তার নামের এক শ্রমিক মারা যান।

ওই আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম ঐক্য পরিষদ। ওই পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে তিন দিনের জন্য অনশন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বরের আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে শ্রমিকেরা আবারও অনশনে বসবেন। শ্রমিকেরা অনশনস্থল ত্যাগ করলেও প্যান্ডেল খোলা হবে না।