তুরাগতীরে চলতি সপ্তাহেই অভিযান

লালবাগে বুড়িগঙ্গা নদীতীরে অবৈধ গ্যারেজে বিআইডব্লিউটিএর অভিযান। গতকাল সকালে।
লালবাগে বুড়িগঙ্গা নদীতীরে অবৈধ গ্যারেজে বিআইডব্লিউটিএর অভিযান। গতকাল সকালে।

তুরাগতীরে অবৈধ দখল ঠেকাতে চলতি সপ্তাহে নতুন করে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এ ছাড়া তারা গতকাল শনিবার অভিযান চালিয়ে লালবাগে বুড়িগঙ্গার তীর দখল করে গড়ে তোলা গ্যারেজ ও মহাজনি আড়ত উচ্ছেদ করেছে।

তুরাগতীরে অভিযান চালাতে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নির্বাহী হাকিম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ও ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এ কে এম আরিফ উদ্দিন।

তুরাগতীরে দখল নিয়ে গতকাল প্রথম আলোতে ‘আবার শুরু হয়েছে দখল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা আরিফ উদ্দিন বলেন, প্রতিবেদনটি তাঁদের নজরে এসেছে। গতকাল তাঁরা তুরাগ নদের তীরভূমি পরিদর্শন করেছেন।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর তীরে অভিযান চালিয়েছিল বিআইডব্লিউটিএ। অভিযানে প্রায় ৫ হাজার স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়। জব্দ করা মালামাল ও নদীর তীর ভরাট করা মাটি নিলামে ১০ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। অভিযানের পর বিরুলিয়া সেতু থেকে টঙ্গী সেতু পর্যন্ত নদের জায়গা ভরাট করে দখল করা মাটি নিলামে বিক্রি করা হয়েছিল। কিন্তু এই মাটি আর অপসারণ করা হয়নি।

গতকাল তুরাগ পরিদর্শনে আরিফ উদ্দিন ছাড়াও ঢাকার চারপাশের সীমানাখুঁটিসহ চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক সংস্থাটির সদস্য (অর্থ) নুরুল আমিন, ঢাকা নদীবন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউল ইসলাম প্রমুখ ছিলেন।

আরিফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম আলোর পর্যবেক্ষণের সঙ্গে তাঁরা বাস্তবতার মিল দেখেছেন। কয়েকটি স্থানে মাটি সরালেও নতুন করে বর্জ্য ফেলে তুরাগ ভরাটের চিত্র তাঁরা দেখেছেন। খবর নিয়ে তাঁরা জেনেছেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকার বর্জ্য চুক্তিভিত্তিক নদের তীরে ফেলছে দখলদারেরা। তাদের বিরুদ্ধে গত রাত থেকে অভিযান শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

লালবাগে গ্যারেজ উচ্ছেদ

পুরান ঢাকার লালবাগে বুড়িগঙ্গা নদীর জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা গ্যারেজ মহাজনি আড়তসহ বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) অভিযান চালিয়ে সেখানকার রিকশা, ভ্যান, মোটরযানের গ্যারেজসহ অন্য স্থাপনা উচ্ছেদ করে।

 গতকাল প্রথম আলোয় ‘লালবাগে নদী দখল করে গ্যারেজ’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে লালবাগের বাঁশপট্টিতে এই অভিযান চালানো হয়। বেলা ১১টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা অভিযান চলে। পুলিশ ও আনসারের সহায়তায় পরিচালিত এই অভিযানের শুরুতে রিকশাসহ বিভিন্ন গ্যারেজের মালিকেরা (মহাজন) পালিয়ে যান। এ সময়ে বিভিন্ন গ্যারেজের কয়েকজন কর্মচারীকে ধরা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে বিআইডব্লিউটিএর এক্সকাভেটর একে একে গ্যারেজগুলো উচ্ছেদ করে। কিছু লাইসেন্সবিহীন রিকশা ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়। বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এ কে এম আরিফ উদ্দিন বলেন, গতকাল সকালে বাঁশপট্টি এলাকায় নদীর জায়গায় তৈরি সব অবৈধ স্থাপনাই উচ্ছেদ করা হয়েছে।