'ধোঁয়া বের হয়, মশা মরে না'

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

‘বিকেল হইলে শুনি মেশিনের আওয়াজ। সেখান থেকে ধোঁয়া বের হয়। তবে মশা মরে না। সন্ধ্যা হইলে ঠিক কামড়াতে শুরু করে। রাইতে মশারি ছাড়া ঘুমান যায় না।’ কথাগুলো ধলপুর এলাকার বাসিন্দা হাসনাহেনা আক্তারের।

ধলপুর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের সায়েদাবাদ, গোলাপবাগ, বিবির বাগিচার ১ থেকে ৪ নম্বর গেটসহ বেশ কিছু এলাকায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। এ ছাড়া ডিএসসিসির ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ ফারুক সড়ক, নবীনগর ও যাত্রাবাড়ী এলাকার লোকজনও মশার উপদ্রবের অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এসব এলাকায় বিকেল হলেই মশার উৎপাত শুরু হয়। আর সন্ধ্যার পর কয়েল বা স্প্রে ছাড়া ঘরে থাকা যায় না।

যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মোহাম্মদ বাপ্পী বলেন, বিকেল হলেই বাসায় মশা বেড়ে যায়। সন্ধ্যা নাগাদ তা চরমে পৌঁছে। মশার জ্বালায় কোথাও বসা যায় না। আগেভাগে বাসার দরজা–জানালা বন্ধ রাখলে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়।

নবীনগর এলাকার বাসিন্দা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে মশাও বেড়েছে।

সম্প্রতি বিকেলে ধলপুর, সায়েদাবাদ, গোলাপবাগসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন মশক নিধনকর্মী এলাকাগুলোর প্রধান সড়ক ও গলি পথে মশার ওষুধ ছিটাচ্ছেন। সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় লোকজন বলেন, মশা যেমন ছিল তেমনই আছে। ওষুধ ছিটানোর পর কোনো ব্যতিক্রম দেখছেন না তাঁরা।

গোলাপবাগের একটি ভবনের তিনতলায় থাকেন রায়হান আহমেদ। সন্ধ্যায় তাঁর বাসায় গেলে তিনি বলেন, ‘দেখলাম মশার ওষুধ ছিটানো হয়েছে। মশা মরার কথা। অথচ দেখেন আমার বাসায় মশার উপদ্রব একটুও কমেনি।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ডিএসসিসির ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানানো হয়।

আর ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম বলেন, এ মাসের ৩ ও ৫ তারিখ দুই দিন ক্রাশ প্রোগ্রামের আওতায় তাঁর এলাকায় ওষুধ ছিটানো হয়েছে। এখন নিয়মিত চারজন মশক নিধনকর্মী ওয়ার্ডে ওষুধ ছিটাচ্ছেন। তবে লোকবলসংকটের কারণে এক দিন পরপর ওষুধ পাচ্ছেন এলাকাগুলো। কিন্তু মশা কমছে না কেন, বুঝতে পারছেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসি প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শরীফ আহমেদ প্রথম আলাকে বলেন, ‘মশার যে ওষুধ এখন ছিটানো হচ্ছে, তা পরীক্ষিত ও কার্যকর। তবে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো কাভার্ড ড্রেনের মধ্যে ওষুধ ছিটানো। সেটা যথাযথভাবে ছিটানো যায় না বলেই মশার উপদ্রব কমছে না।’ তিনি আরও বলেন, ডিএসসিসির পক্ষ থেকে সম্প্রতি দুবার ক্রাশ প্রোগ্রাম চালানো হয়েছে। এখন ওয়ার্ডগুলোতে নিয়মিত ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা মশা কমানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।