বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তি সত্ত্বেও মোছলেম 'হ্যাঁ', বাবলু 'না'

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও মোছলেম উদ্দিন আহমেদ(ডানে )
জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও মোছলেম উদ্দিন আহমেদ(ডানে )

চট্টগ্রাম–৮ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলকারী আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তা যাচাইবাছাই শেষে জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মনোনয়ন বাতিল এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা এবং নগরের চান্দগাঁও থানা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম–৮ আসনের উপনির্বাচন আগামী ১৩ জানুয়ারি। গত ৭ নভেম্বর সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদল ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু একজন ব্যক্তির ঋণের গ্যারেন্টার ছিলেন। রিলায়েন্স ফাইন্যান্সিয়াল লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর পরিচিত ব্যক্তি ঋণ নিয়েছিলেন। নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের এক সপ্তাহ আগে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু এই ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেছেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মনোনয়নপত্র দাখিলের আগ মুহূর্তে। ফলে বাবলুর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র আরও জানায়, আজ আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদের মনোনয়নপত্র বাতিলের দাবি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ তিনি ঋলখেলাপি বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামের লালদীঘি শাখা সোনালী ব্যাংকের প্রতিনিধি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের পক্ষে দাঁড়ায়। মোছলেম উদ্দিন ঋণ সমন্বয় করেছেন বলে সোনালী ব্যাংক বক্তব্য তুলে ধরে। ব্যাংকটির প্রতিনিধির বক্তব্যের ভিত্তিতে মোছলেম উদ্দিন আহমেদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু সাহেব তৃতীয় ব্যক্তির ঋণের গ্যারেন্টার ছিলেন। ওই ব্যক্তি ঋণ পরিশোধও করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সাত দিন আগে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু তা করা হয়নি বলে বাবলু সাহেবের মনোনয়নত্র বাতিল হয়েছে।

মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে মোছলেম উদ্দিন আহমদের মনোনয়নপত্র বৈধ। আইন অনুযায়ী মনে হয়েছে তাঁকে দেওয়া যায়। তাই আমরা তাঁর মনোনয়পত্র বৈধ ঘোষণা করেছি।’

বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান মনে করেন, আইন সবার জন্য সমান নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়ন সঠিক, আর জাতীয় পার্টির প্রার্থীরটা বেঠিক (অশুদ্ধ) বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা যে সিদ্বান্ত দিয়েছেন তা মেনে নেওয়া যায় না।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, গণফ্রন্ট প্রার্থী উত্তম কুমার চৌধুরী যথাযথভাবে মনোনয়ন ফরম পূরণ করেননি। ফলে তাঁর মনোনয়ন ফরম বাতিল হয়েছে।

নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, আগামী ২২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।