শক্তি সঞ্চয় করে সঠিক জায়গায় আঘাত করতে হবে: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

বি​এনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলের মধ্যে সরকারের এজেন্টরা ঢুকে পড়েছে। তারা ভেতরে ঢুকে বিভিন্নভাবে বিভেদ ও পার্থক্য সৃষ্টি করতে চায়। বিভিন্ন কথা বলে বিভ্রান্ত করতে চায়। তিনি বলেন, ‘কেউ বিভ্রান্ত হবেন না, আমরা সবাই ঠিক আছি, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। আমাদের দরকার শক্তি সঞ্চয় করে সঠিক সময় সঠিক জায়গায় আঘাত করতে হবে।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ রোববার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে দলের এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজকে অনির্বাচিত আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা অনেক বড় বড় কথা বলেন। তারা বিএনপিকে উপদেশ দেন। আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই, ৭১ সালে যুদ্ধের সময় কতজন বাংলাদেশে রণাঙ্গনে থেকে যুদ্ধ করেছেন, তার হিসাব চাই আমরা।’ তাঁর অভিযোগ, ‘সেই দিন আপনারা (আ.লীগের নেতা) পালিয়ে গিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে জাতিকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খন্দকার মোশতাক জিয়াউর রহমানকে প্রধান সেনাপতি নিয়োগ করে সুবিধা করে দিয়েছেন। খন্দকার মোশতাক ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মানুষ। তিনি এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা সেই সময় ষড়যন্ত্র করে তাঁকে সরিয়ে সরকার গঠন করেছিল। আমরা সেই কথা ভুলে যাইনি।’

ভারতের নাগরিকত্ব আইনের কথা উল্লেখ করে বি​এনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৪৭ সালে যেসব বিষয় নিয়ে দেশ ভাগ করা হয়েছিল, আজকে ৭০ বছর পরে এসে সে বিষয়গুলোকে আবার সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, অমুসলিমরা যেতে পারবে, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আর মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। বিভাজন, বৈষম্যটা দেখেন। তিনি বলেন, ‘আপনি ভিসা নিয়ে যাবেন ইন্ডিয়াতে, ভিসা শেষ হয়ে গেল যদি মুসলিম হন, এক দিন থাকার জন্য আপনাকে জরিমানা গুনতে হবে ২১ হাজার টাকা, আর আমাদের নিতাই দা (নিতাই রায়চৌধুরী) বা গয়েশ্বর দাদা (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) যদি থাকেন, তাঁদের গুনতে হবে ১০০ রুপি। সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক ব্যাপার। আমরা চিন্তাও করতে পারি না ভারতের মতো একটি রাষ্ট্রে এ রকম সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু হবে এবং এ রকম সাম্প্রদায়িক আইন তৈরি হবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ এ রকম সাম্প্রদায়িকতা চিন্তাও করতে পারে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সবচেয়ে সুন্দর দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ এবং এটা আমরা গর্ব করে বলি। আর তারা (ভারত) পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলছে, বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হয়। তার জন্যই নাকি তারা এনআরসি আইন তৈরি করেছে। এ কথা বললে বলা হবে আমরা ভারতবিরোধী।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে আমাদের সরকার দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য কোথাও দাঁড়িয়ে কোনো কথা বলছে না। শুধু একটাই ঢোল বাজায়, উন্নয়ন হচ্ছে উন্নয়ন হচ্ছে। এমন উন্নয়ন যে পেঁয়াজের কেজি ২৪০ টাকা ৩০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। কৃষক ধানের দাম পায় না। প্রতি মণে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা লোকসান। আজকে ব্যাংকগুলো খালি হতে হতে শেষ পর্যায়ে এসে গেছে।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, খায়রুল কবির, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন প্রমুখ।