কথিত জিনের বাদশার খপ্পরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক

কথিত জিনের বাদশা পরিচয়ে দিনাজপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষকের ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত সোমবার তাঁদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল।

দুই আসামি হলেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার গোসাইপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন (২০) ও একই গ্রামের অহির উদ্দিনের ছেলে সাবু মিয়া (২০)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কথিত জিনের বাদশা পরিচয়ে দিনাজপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতিও দিয়েছেন।’

এ ঘটনায় ওই নারী শিক্ষকের ছেলে মো. রকিবুল ইসলাম বাদী হয়ে গত শনিবার শাহবাগ থানায় দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজাহারে রকিবুল দাবি করেছেন, তাঁর মা দিনাজপুরের একটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তাঁর মাকে জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যরা মুঠোফোনে কথা বলেন। পারিবারিক শান্তি ও ধনদৌলতের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর মায়ের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় মোট ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। টাকা দেওয়ার কথা কাউকে না বলার জন্য বারবারই পরামর্শ দিয়ে আসছিল চক্রের লোকজন। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর মাসে চক্রের সদস্যরা তাঁর মাকে টাকা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি মাজারে দেখা করতে বলেন।

রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাঁর মাকে নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এবং ধনদৌলতের লোভ দেখিয়ে প্রতারক চক্রটি তাঁর মাকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়।

তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই সাইফুল আলম ঢাকার আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শাহাদাত ও সাবু মিয়া স্বীকার করেছেন, তাঁরা অনেক লোকের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছেন। চক্রের সদস্যরা নিজেদের জিনের বাদশা বলে পরিচয় দিতেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।