বিজয় উৎসব দেখতে তুরস্ক থেকে ঢাকায়

বিজয় উৎসব দেখতে তুরস্ক থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছে ১৩ জনের একটি পর্যটক দল। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন সাতসকালে ৪৯তম বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করলেন তাঁরা। গতকাল সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে।  ছবি: সাইফুল ইসলাম
বিজয় উৎসব দেখতে তুরস্ক থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছে ১৩ জনের একটি পর্যটক দল। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন সাতসকালে ৪৯তম বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করলেন তাঁরা। গতকাল সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। ছবি: সাইফুল ইসলাম

কারও গলায় জড়ানো, কারও হাতে বাঁধা বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। কেউ ছবি তুলছেন জনসমুদ্রের। কেউবা দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীর ক্যামেরার সামনে। হাঁটতে হাঁটতে মানুষজনকে হাই-হ্যালো বলে সম্ভাষণ জানাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলছেন, ‘জয় বাংলা’ কিংবা ‘বাংলাদেশ ভালোবাসি’।

গতকাল সোমবার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১৩ বিদেশির দলটিকে ঘিরে অনেকের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এগিয়ে গিয়ে নিজের পরিচয় দিতেই দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য আহমেদ এগিয়ে এলেন। বললেন, শুধু বাংলাদেশের বিজয় দিবসের উৎসব দেখতেই সুদূর তুরস্ক থেকে এসেছেন।

আহমেদ জানালেন, ১০ দিন আগে বাংলাদেশে এসেছেন তাঁরা। ৪ জন পুরুষ ও ৯ নারীর ওই দলের সদস্যরা পাঁচটি পরিবারের সদস্য। সবাই বন্ধু। দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের বিজয় উৎসব দেখার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।

বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা–সংগ্রামের পুরো বিষয়টি তাঁর জানা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার ইতিহাস অনেক আগে থেকেই জানেন। তিনি নিজে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের খোঁজখবর নিয়মিত রাখেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বিশাল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কারণেই বাংলাদেশের প্রতি তাঁর আগ্রহ জাগে।

তাঁর নিজের ওই মুগ্ধতার কথা পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বন্ধুরাও জানতেন। বাংলাদেশের বিজয় উৎসবের বিষয়ে অনেক খোঁজখবর নিয়েছেন। জেনেছেন, এখানে বিজয়ের দিনে যে উৎসব হয়, তাতে দেশের সব মানুষই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার ফুল ছড়িয়ে দেন। সারা দেশে উৎসব হয়। এসব জেনে এই উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন থেকে প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানালেন।

উৎসব দেখে কী মনে হলো—জানতে চাইলে সবাই একসঙ্গে বলে উঠলেন, ওয়ান্ডারফুল অ্যান্ড ক্রেজি। জাতীয় স্মৃতিসৌধে এত মানুষের ঢল দেখে তাঁরা মুগ্ধ।

দলটির সদস্যরা জানালেন, ১০ দিন আগে তাঁরা বাংলাদেশে এসে দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরেছেন। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধতার কথা জানাতেও ভুললেন না তাঁরা। একই সঙ্গে এ দেশের মানুষের আন্তরিকতা তাঁদের ভালো লেগেছে। রাজধানী ঢাকার চেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ অনেক সহজ-সরল বলেও মনে হয়েছে তাঁদের কাছে।

দলটির সদস্যরা জানালেন, বিজয় উৎসবে অংশ নিতে পেরে তাঁদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। ভবিষ্যতে আবারও এ দেশে আসতে চান বলে জানালেন আহমেদ। গতকাল রাতেই তাঁদের দেশে ফিরে যাওয়ার কথা।