স্বপ্ন পূরণ ফারজানার

ফারজানা
ফারজানা

শত দারিদ্র্যের মধ্যেও ইচ্ছা ছিল মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর। সেই স্বপ্ন পূরণ হলো অভাবী মা হেলেনা খাতুনের। তাঁর মেধাবী মেয়ে লাইলাতুন ফারজানা পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুনর রশীদ নিজ উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার ফারজানাকে ভর্তি করান। গতকালই ছিল ফারজানার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার শেষ দিন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) অজিত কুমার ঘোষ মুঠোফোনে ফারজানার ভর্তির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলেছেন।

উপাচার্য হারুনর রশীদ বলেন, ভর্তির পর এখন ফারজানার লেখাপড়ার ব্যাপারেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সহায়তা করা হবে।

ফারজানা নালিতাবাড়ী শহরের দক্ষিণ গড়কান্দা এলাকার মো. শওকত আলীর মেয়ে। তাঁর বাবা লন্ড্রির দোকান চালান। মা গৃহিণী।

হেলেনা জানান, গত ৩০ নভেম্বর পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তাঁর মেয়ে ফারজানা। গত শনিবার রাতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুঠোফোনে পাঠানো খুদে বার্তায় ফারজানাকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি হতে জানানো হয়। তাঁর ভর্তির জন্য প্রয়োজন ছিল ১৩ হাজার টাকা। এত টাকা না থাকায় শেষ সময়ে এসে মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গোটা পরিবার।

ভর্তির টাকা জোগাড় করতে না পেরে হেলেনা রোববার সকালে স্থানীয় প্রেসক্লাবে আসেন। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে অসহায়ত্বের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ নিয়ে সোমবার প্রথম আলোয় ‘ভর্তির টাকার জন্য আকুতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে অনেকে মেয়েটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য খোঁজখবর নেন। মুঠোফোনে তাঁর মায়ের সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করেন।

ফারজানা পৌর শহরের আবদুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পান। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে এইচএসসিতে পান জিপিএ-৪.৮৩।

মেয়ের ভর্তিতে এগিয়ে আসা সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফারজানার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তাঁর মা।