ভিপি নুরুলের সমাবেশে হামলার প্রতিবাদ কর্মসূচিতেও হামলা

ডাকসুর ভিপি নুরুলের সমাবেশে হামলার প্রতিবাদ করতে জড়ো হয়েছিলেন সিলেট সাধারণ শিক্ষার্থী আন্দোলন পরিষদের সদস্যরা। সেখানে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। সিলেট, ১৮ ডিসেম্বর। ছবি: আনিস মাহমুদ
ডাকসুর ভিপি নুরুলের সমাবেশে হামলার প্রতিবাদ করতে জড়ো হয়েছিলেন সিলেট সাধারণ শিক্ষার্থী আন্দোলন পরিষদের সদস্যরা। সেখানে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। সিলেট, ১৮ ডিসেম্বর। ছবি: আনিস মাহমুদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হকের সমাবেশে হামলার প্রতিবাদ করতে জড়ো হয়েছিলেন সিলেট সাধারণ শিক্ষার্থী আন্দোলন পরিষদের সদস্যরা। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে লাঠি-স্টাম্প নিয়ে হামলা চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

হামলার ঘটনায় পরিষদের চার সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন আলী হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, ফুয়াদ আহমেদ। আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। তবে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সংগঠন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানাতে নেতা–কর্মীদের নিয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন ডাকসু ভিপি নুরুল হক। সেখানে নুরুলের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এর প্রতিবাদে আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের সাধারণ শিক্ষার্থী আন্দোলন পরিষদ প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় লাঠিসোঁটা-স্টাম্প হাতে প্রায় ২০ জন হামলা চালান। হামলাকারীরা কর্মসূচির জন্য আনা মাইক ও রিকশা ভাঙচুর করে মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় হামলাকারীদের লাঠি ও স্টাম্পের আঘাতে সংগঠনের চারজন সদস্য আহত হন।

সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুধবার দুপুরে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেছিল। এ সময় হঠাৎ বেশ কয়েকজন জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালান। হামলাকারীদের কাউকে চিনতে পারিনি। তবে তাঁরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। হামলার সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা থাকলেও তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নেননি। হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক নগরের চৌহাট্টা থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।’

কর্মসূচির জন্য আনা মাইক ও রিকশা ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। সিলেট, ১৮ ডিসেম্বর। ছবি: আনিস মাহমুদ
কর্মসূচির জন্য আনা মাইক ও রিকশা ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। সিলেট, ১৮ ডিসেম্বর। ছবি: আনিস মাহমুদ

তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাওয়াদ ইবনে জাহিত খান প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের কখনোই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর কথা নয়। ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালালেই তাঁরা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মী হবে এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলার খবর শুনে আমি নিজে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। শুনেছি ছাত্রদের একটি সংগঠন শহীদ মিনারে দাঁড়ানোর পর সেখানে কে বা কারা হামলা চালিয়েছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য চৌহাট্টা মোড়ে ছিল। হামলার খবর শুনে ঘটনাস্থলে যেতে যেতে হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে। হামলার ব্যাপারে অভিযোগ করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’