টাকার 'লোভে' পড়ে ভাতিজার বদলে কারাগারে চাচা

অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের সাজা হয়েছিল মোস্তাক আহমদের (৪৫)। ৫০ হাজার টাকার ‘লোভ’ দেখিয়ে নিজের বদলে চাচা আমান উল্লাহকে (৬৫) আদালতে জবানবন্দি দিতে পাঠান তিনি। পরে মোস্তাক সেজে আদালতে আসা আমান উল্লাহকেই কারাগারে পাঠানো হয়। ভাতিজা মোস্তাকের বদলে আমান উল্লাহ এখন কক্সবাজার কারাগারে জেল খাটছেন।

মোস্তাক আহমদের বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের বাহারছড়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুর রহিম। চাচা আমান উল্লাহর বাড়িও একই গ্রামে।

তবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মানষ বড়ুয়া প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে আসল আসামি মোস্তাককে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি আদালতে মামলার শুনানি শুরু হবে। তখন চাচা আমান উল্লাহকে মুক্তি দিতে পারেন আদালত।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে রামু থানা-পুলিশ অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার করে মোস্তাককে। কয়েক মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান মোস্তাক। পরে ২০০১ সালে সৌদি আরব চলে যান। ২০১০ সালে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত অস্ত্র মামলায় মোস্তাককে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। ১৮ বছর সৌদি আরবে থাকার পর গত সেপ্টেম্বরে দেশে ফেরেন মোস্তাক। এরপরই জেলে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে নতুন ফন্দি সাজান তিনি। ভাতিজার ফাঁদে পা দিয়ে ফেঁসে যান চাচা আমান উল্লাহও।

আমান উল্লাহর জামাতা হোসাইন মোহাম্মদ বলেন, ১ ডিসেম্বর হঠাৎ নিখোঁজ হন আমান উল্লাহ। বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তাঁরা জানতে পারেন, আমান উল্লাহ কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দী আছেন। এরপর আমান উল্লাহর কারাভোগের রহস্য উদ্‌ঘাটনে গোয়েন্দা পুলিশের শরণাপন্ন হয় পরিবার। পরে তদন্তে আসল রহস্য উদ্‌ঘাটিত হয়। গত সোমবার রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কক্সবাজার শহরের কলাতলীর আদর্শগ্রাম এলাকা থেকে মোস্তাককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কথা স্বীকার করেন মোস্তাক।

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মাসুম খান প্রথম আলোকে বলেন, আমান উল্লাহ সহজসরল প্রকৃতির লোক। ৫০ হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে নিজের পরিবর্তে আমান উল্লাহকে আদালতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন মোস্তাক। চাচাকে তিনি বলেন, তাঁর নামে পুরোনো একটি মামলা চলছে। কিছু অসুবিধার কারণে তিনি আদালতে হাজিরা দিতে পারছেন না। তাই মোস্তাক সেজে তাঁকে আদালতে জবানবন্দি দিতে যেতে হবে। পরে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে মোস্তাক ভেবে আমান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।