রাজাকারের তালিকায় কোনো মুক্তিযোদ্ধা থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেন। ছবি: পিআইডি
গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেন। ছবি: পিআইডি

রাজাকারের তালিকায় কোনো মুক্তিযোদ্ধা থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সদ্য প্রকাশিত তালিকা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর করা তালিকা ছাড়া আর কিছু নয়।

রাজাকারের তালিকা যাচাই-বাছাই করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটা কথা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার খেতাব দেওয়া হবে না। এটা হতে পারে না… এটা অসম্ভব, অন্তত আমার সময় না।’

আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকার ব্যাপারে ওই সব পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে বিষয়টি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে যারা কষ্ট পেয়েছেন, দুঃখ পেয়েছেন তাঁদেরকে বলব- শান্ত হোন এবং বিষয়টি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখুন… তাঁদের (মুক্তিযোদ্ধারা) নাম রাজাকারের তালিকায় থাকতে পারে না… তাঁরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।’

গত রোববার একাত্তরের রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতাবিরোধী ১০ হাজার ৭৮৯ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু তালিকায় রাজশাহী, বরগুনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও বগুড়ায় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম এসেছে, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে পরিচিত। এসেছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার নামও। ফলে এই তালিকা নিয়ে ওই সব এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এই তালিকা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন। এই তালিকা প্রকাশের তিন দিনের মাথায় আজ সন্ধ্যায় তা স্থগিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই না করে ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ করায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের পরে এ তালিকা প্রকাশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিজয় দিবসের আগে তাড়াতাড়ি করে তারা তা প্রকাশ করেছে।

‘এটি (তালিকা) কোনোভাবেই রাজাকারদের তালিকা নয়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের পৃথক তালিকা রয়েছে যা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছিল।