ত্রিশালে সাংসদের প্রশ্রয়ে জমি দখলের অভিযোগ

ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় মোজাম্মেল হক নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার জমি রেজাউল করিম নামের এক ব্যক্তি দখল করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মোজাম্মেল হক এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগ, ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের সাংসদ হাফেজ রুহুল আমিন মাদানীর প্রশ্রয়ে রেজাউল করিম জমি দখল শুরু করেছেন। তবে এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছেন সাংসদ। তিনি বলেছেন, তিনি রেজাউল করিম নামের কাউকে চেনেন না এবং এ ধরনের কোনো জমি দখলের ঘটনা তাঁর জানা নেই।

সাংসদের প্রশ্রয়ে জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন রেজাউল করিমও।

মোজাম্মেলের বাড়ি ত্রিশালের বালিপাড়া এলাকায়। তিনি বালিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বলে দাবি করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান তাঁর ছেলে হারুন অর রশিদ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ত্রিশাল পৌর শহরের দরিরামপুর বড়কুমা এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিম এক বছরের জন্য উপজেলার বালিপাড়া এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু উত্তোলনের ইজারা নিয়েছেন। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন থেকে তিনি এ ইজারা নেন। ইজারা নেওয়ার পর রেজাউল বালিপাড়া এলাকার চর ইছামতী মৌজায় মোজাম্মেলের ১২ দশমিক ৫৫ একর জমি দখলের চেষ্টা করছেন। কিছু জমি ইতিমধ্যে দখল করেও নিয়েছেন। এই জমিতে উত্তোলন করা বালু রাখা হয় এবং সেখান থেকে ট্রাকে তোলা হয়। সাংসদ রুহুল আমিন মাদানীর প্রশ্রয়ে রেজাউল জমি দখলের চেষ্টা করছেন। জমি দখলের বিষয়ে ১ ডিসেম্বর মোজাম্মেল আদালতে মামলা করলে আদালত ওই জমিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন। তারপরও থেমে নেই জমি দখলের চেষ্টা। আদালতের স্থিতাবস্থা জারির বিষয়টি মোজাম্মেলের পক্ষ থেকে ইউএনও ও ত্রিশাল থানায় লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার মেলেনি।

তবে ত্রিশালের ইউএনও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল জাকির বলেন, ‘এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগ আমার চোখে পড়েনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব এমন কোনো চিঠি আমার কাছে এসেছে কি না।’

জমি দখলের বিষয়ে আদালতে মামলা করায় এবং প্রতিবাদ করায় রেজাউলের লোকেরা মোজাম্মেলের পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের পর এক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেলের ছেলে হারুন অর রশিদ বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় তিন একর জমি দখল করে নিয়েছেন রেজাউলের লোকেরা।

হারুন অর রশিদ বালিপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তাঁর ভাষ্য, তাঁরা পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও জমি দখলের বিষয়ে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে রেজাউল গতকাল দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সব নিয়ম মেনে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বালু তোলার ইজারা নিয়েছি। কারও জমি দখল বা ব্যবহার করছি না। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট।’

সাংসদ রুহুল আমিন মাদানী বলেন, ‘রেজাউল করিম নামের কোনো ব্যক্তিকে আমি চিনি না। বালু উত্তোলন বা জমি দখলের যেসব কথা বলা
হয়েছে, সেসব বিষয় সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তবে শুনেছিলাম বালুমহালে কিছু ব্যক্তি অন্যায়ভাবে চাঁদা দাবি করেছেন। হতে পারে চাঁদা না পেয়ে
ওই ব্যক্তিরা সংবাদ সম্মেলন করে এসব অপপ্রচার করছেন।’