ঠিকাদার জামাল চৌধুরী কারাগারে

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আক্তার ট্রেডার্সের পরিচালক জামাল আহমদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের দুটি মামলায় জামাল আহমদ চৌধুরী সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালতের বিচারক জিয়াদুল ইসলাম আক্তার ট্রেডার্সের পরিচালক জামাল আহমদ চৌধুরীর জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জামাল আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেন চার ঠিকাদার। এসব মামলায় তিনি বেশ কিছুদিন ধরে উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে ঠিকাদার তেরাব আলী ও মো. বাবুল মিয়ার দায়ের করা দুটি মামলায় বুধবার দুপুরে সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন জামাল আহমদ চৌধুরী। এ সময় তাঁর জামিনের আবেদন করেন আইনজীবীরা। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কপি আদালতে উত্থাপন করেন। পরে আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জামাল আহমদকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে জামাল আহমদের আত্মসমর্পণের খবর শুনে তাঁর কাছ থেকে কাজ কেনা সাতজন ঠিকাদার আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হন। আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকা ঠিকাদার মো. বাবুল মিয়া বলেন, ‘আমিসহ আরও তিনজন ঠিকাদার জামাল আহমদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করেছিলাম। আমরা তাঁর কাছ থেকে প্রকল্প কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। জামাল আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।’

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী তাজউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযুক্ত ঠিকাদার অভিনব কায়দায় টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সে সঙ্গে তিনি পলাতক ছিলেন। উচ্চ আদালত থেকে জামিনের মেয়াদ শেষ হলে বুধবার নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিনের আবেদন করেন। এ সময় আমরা প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন উত্থাপন করে জামিনের বিরোধিতা করি। প্রায় এক ঘণ্টা জামিনের শুনানি শেষে বিচারক আসামির জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’

জামাল আহমদ সরকারি পাঁচটি দপ্তর থেকে নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়মিত কাজ পেতেন। কাজ বিক্রির কোনো নিয়ম না থাকলেও কার্যাদেশ পাওয়ার পর তিনি নিজে কাজ না করে বিক্রি করেন। এতেই তিনি আয় করেন কোটি কোটি টাকা। সম্প্রতি সরকারের শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর তাঁর কাছ থেকে প্রকল্প কেনা ঠিকাদারদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। প্রকল্প কাজের বিলের টাকা জামাল আহমদের ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়ায় বেকায়দায় পড়েন ঠিকাদাররা। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ‘প্রকল্প বিক্রি করে টাকা বাগানোই তাঁর ব্যবসা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।