শিশু জয়নব হত্যায় দোকানি গ্রেপ্তার, আদালতে স্বীকারোক্তি

মোবারক মিয়া ওরফে কানাই মিয়া
মোবারক মিয়া ওরফে কানাই মিয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জয়নব আক্তার হত্যায় (১০) এক দোকানিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ওই ব্যক্তি।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মোবারক মিয়া ওরফে কানাই মিয়া (৫০)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁকে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বড়ইবাড়ি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোবারক টংদোকানি।

আজ শুক্রবার বিকেলে মোবারক জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ নুরুল হক। তিনি জানিয়েছেন, জবানবন্দি শেষে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

জয়নব সরাইল উপজেলা সদরের পশ্চিম কুট্টাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়ির কাছের একটি বাঁশঝাড় থেকে জয়নবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত সোমবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী এক স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় শিশুটি। ওই সময় এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। জয়নব ও মোবারকের বাড়িও কাছাকাছি।

জবানবন্দির বরাত দিয়েছে পুলিশ বলছে, সোমবার সন্ধ্যার পর জয়নবকে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষণ শেষে হত্যা করেন মোবারক। রাতেই শিশুটির লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখেন তিনি।

লাশ উদ্ধারের পর মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে সরাইল থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছিলেন জয়নবের মা ফেরদৌসী বেগম (৩৮)। পুলিশ এই মামলায় মোবারককে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর মোবারক গা ঢাকা দিয়েছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, মোবারক ইতিমধ্যে পাঁচটি বিয়ে করেছেন। ভবঘুরে ও বখাটে স্বভাবের কারণে সব স্ত্রীই তাঁকে ত্যাগ করেছেন। দাম্পত্য জীবনে তাঁর কোনো সন্তানও নেই।

পুলিশের ভাষ্যমতে, দুই বছর ধরে মোবারক বাড়ির অদূরে টংদোকানে ব্যবসা করে আসছিলেন। কয়েক মাস ধরে চকলেট দিয়ে তিনি শিশুটির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। শিশুটি তাঁকে দাদা সম্বোধন করত। পুলিশ লাশের পাশে একটি চকলেটও পেয়েছিল। মোবারককে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে এই চকলেট সূত্র হিসেবে কাজ করে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জয়নবের বাবা আবদুল হাফিজ ও মা ফেরদৌসী বেগম জানান, তাঁরা কানাইয়ের (মোবারক) ফাঁসি চান। আর কারও ঘর এভাবে খালি হোক, তাঁরা তা চান না।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কানাই মিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন। এ ঘটনা তিনি একাই ঘটিয়েছেন। শিশুটিকে ধর্ষণের পর ভয়ে তিনি তাকে হত্যা করেন।’