অর্থাভাবে হাফিজার উচ্চ শিক্ষা নিয়ে শঙ্কা

হাফিজা আক্তার
হাফিজা আক্তার

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন হাফিজা আক্তার। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি ও তাঁর পরিবার।

হাফিজা আক্তার শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী বাজার এলাকার বাসিন্দা হজরত আলীর মেয়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে হাফিজা বড়। অন্য দুজন স্কুলে পড়ে। হজরত আলী সড়কের ধারে ফল বিক্রি করে যা আয় করেন, তা দিয়ে তাঁদের সংসার চলে।

হাফিজা জানান, গত ২৯ নভেম্বর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে তাঁকে গণিত বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ভর্তির সময় হাতে আছে মাত্র দুই দিন। এত অল্প সময়ে কীভাবে এত টাকা তাঁর মা-বাবা জোগাড় করবেন, এ নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

হাফিজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি লেখাপড়া করে বিসিএস ক্যাডার হতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। এতে প্রায় ১৯ হাজার টাকার প্রয়োজন। এত টাকা মা-বাবা কেমনে সংগ্রহ করবেন, বুঝতে পারতাছি না। আমি কি উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাব না?’

হাফিজার বাবা হজরত আলী জানান, হাফিজার লেখাপড়ার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ। কিন্তু অর্থাভাবে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মেয়েটা জেদ ধরে লেখাপড়ার। মায়ের অনুরোধ ও এলাকাবাসীর আগ্রহে মেয়ে এসএসসিতে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়। ২০১৭ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পায়। পরে ‘দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থী উন্নয়ন সংস্থা’ (ডপস)  হাফিজার পাশে দাঁড়ায়। এতে সে শেরপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হয়। এ বছর সে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৪ দশমিক ০৯ পায়।

বাবা হজরত আলী বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। ফল বেইচা যা পাই তা দিয়ে ঠিকমতো সংসারই চলে না। এত টেহা জোগাড় করমু কেমনে? কিছুই মাথায় ধরতাছে না।’

ডপসের প্রতিষ্ঠাতা মো. শাহিন জানান, হাফিজা মেধাবী কিন্তু গরিব। ডপসের সহযোগিতায় হাফিজা এইচএসসিতে পড়েছেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এখন তাঁর পরিবার এত টাকা কীভাবে সংগ্রহ করবে, এ নিয়ে ভাবছি।