পাবনায় চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় মামলা

সুমন হোসেনের মরদেহ ঈশ্বরদীতে নিয়ে গেলে তাঁর স্ত্রী রুমা খাতুনের আহাজারি। গতকাল রাতে।  ছবি: প্রথম আলো
সুমন হোসেনের মরদেহ ঈশ্বরদীতে নিয়ে গেলে তাঁর স্ত্রী রুমা খাতুনের আহাজারি। গতকাল রাতে। ছবি: প্রথম আলো

পাবনার ঈশ্বরদীতে ভাড়া নিয়ে বিবাদের জের ধরে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে সুমন হোসেনকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে নিহতের স্ত্রী রুমা খাতুন বাদী হয়ে সনি পরিবহন নামের একটি বাসের চালক ও দুই সহকারীকে আসামি করে মামলাটি করেছেন।

তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সুমনের লাশ গতকাল রাতে তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, সুমন হোসেন গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রূপপুর থেকে ভেড়ামারা যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মেহেরপুরের গাংনীগামী সনি পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় বাসের চালকের সহযোগীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তাঁর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চালকের দুই সহযোগী তাঁকে মারপিট করেন। বাসটি লালন শাহ সেতুর পাকশী টোল প্লাজা পার হতেই দুজনে তাঁকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এ সময় চালক তাঁর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় সিসিটিভি ফুটেজের ছবি দেখে গাড়িটির নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আসামিদের কারও নাম দেওয়া হয়নি। তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

যোগাযোগ করা হলে সুমনের স্ত্রীর বড় ভাই শফি হোসেন বলেন, সুমনের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলে অষ্টম শ্রেণি ও মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সংসারে সুমনই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। এখন দুই সন্তানকে নিয়ে তাঁর বোন অসহায় হয়ে পড়েছেন।

সুমনের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা। তিনি ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের ঝাউতলা গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পাশে বাসা ভাড়া করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন। পাকশীর রূপপুর মোড়ে একটি খাবার হোটেলে শ্রমিকের কাজ করতেন।