পাবনায় চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ২

সুমন হোসেনের মরদেহ ঈশ্বরদীতে নিয়ে গেলে তাঁর স্ত্রী রুমা খাতুনের আহাজারি। গতকাল রাতে।  ছবি: প্রথম আলো
সুমন হোসেনের মরদেহ ঈশ্বরদীতে নিয়ে গেলে তাঁর স্ত্রী রুমা খাতুনের আহাজারি। গতকাল রাতে। ছবি: প্রথম আলো

পাবনার ঈশ্বরদীতে ভাড়া নিয়ে বিবাদের জের ধরে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে সুমন হোসেনকে হত্যা মামলায় দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে। আজ শনিবার রাতে ঈশ্বরদী উপজেলা সদর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন সুপার সনি পরিবহন নামের ওই বাসের সুপারভাইজার রোকনুজ্জামান (২৮) ও সহকারী নাসিম উদ্দিন (২২)। তাঁদের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে।

আজ দুপুরে নিহত সুমনের স্ত্রী রুমা খাতুন বাদী হয়ে সুপার সনি পরিবহন নামের একটি বাসের চালক ও দুই সহকারীকে আসামি করে মামলাটি করেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বলেন, ঘটনার পর থেকেই তাঁদের খোঁজা হচ্ছিল। রাত ৮টার দিকে ঈশ্বরদী দিয়ে পালানোর সময় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতের হাজির করা হবে।

সুমনের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়। তিনি ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের ঝাউতলা গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পাশে বাসা ভাড়া করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন। পাকশীর রূপপুর মোড়ে একটি খাবার হোটেলে তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, সুমন গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রূপপুর থেকে ভেড়ামারা যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মেহেরপুরের গাংনীগামী সুপার সনি পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় বাসের চালকের সহযোগীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তাঁর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চালকের দুই সহযোগী তাঁকে মারধর করেন। বাসটি লালন শাহ সেতুর পাকশী টোল প্লাজা পার হতেই দুজন তাঁকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এ সময় চালক তাঁর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে তিনি মারা যান।

সুমনের লাশ গতকাল রাতে তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে সুমনের স্ত্রীর বড় ভাই শফি হোসেন বলেন, সুমনের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলে অষ্টম শ্রেণি ও মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সংসারে সুমনই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। এখন দুই সন্তানকে নিয়ে তাঁর বোন অসহায় হয়ে পড়েছেন।