যে ছেলের জন্য নিঃস্ব মা, সেই ছেলেই মারল মাকে

সব জমি বিক্রি করে ছোট ছেলে আলীম সরকারকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন মা। সেটা ১০ বছর আগে। এত বছরে খুব কমই মায়ের খোঁজ নিয়েছেন। তবে কোনো টাকাপয়সা দেননি এই ছেলে। আর সব জমি বিক্রি করে দেওয়ায় বড় ছেলেও নিঃস্ব। তিনি অন্যের জমিতে কাজ করেন। রাগ করে মাকে দেখেন না। স্বর্বস্ব হারানো এই মায়ের ঠাঁই হয়েছে মেয়ের বাড়িতে। এখন ছোট ছেলে দেশে এলেও মায়ের কপালে জুটেছে নির্যাতন।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আনন্দনগর গ্রামে মা ফুলজান বেওয়ার বাড়ি। তাঁর বয়স এখন ৭৫। নির্যাতনের ঘটনায় গতকাল সোমবার থানায় অভিযোগ দিয়েছেন মা ফুলজান বেওয়া। পুলিশ ছেলে আলীমকে আটক করেছে।

নির্যাতনের শিকার মা অভিযোগ করেন, ছোট ছেলে বেকার ছিল। তাঁর সুখের কথা ভেবে অন্য ছেলে-মেয়েদের অংশসহ জমিটি বিক্রি করে তাঁকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। দুই বছর পর ছেরে দেশে এসে বিয়ে করে। এরপর যখনই এসেছে শ্বশুরবাড়িতেই ওঠেছে। তাঁর (মা) সঙ্গে যোগাযোগ করত না। এবার চার মাস আগে দেশে ফিরে শ্বশুরবাড়িতে ওঠে ছেলে আলীম। আজ তিনি ছেলের খোঁজ নিতে ও জমি বিক্রির টাকায় অন্য ছেলে-মেয়েদের অংশের টাকা চাইতে আলীমের শ্বশুর বাড়িতে যায়। এতে আলীম ও তাঁর স্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। ন্যায়বিচার পেতে বিকেলে তিনি থানায় অভিযোগ করেন।

বর্তমানে ফুলজান বেওয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। সেখানকার আবাসিক চিকিৎসক রবিউল করিম জানান, ফুলজানের ডান হাতে বাড়ির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাত ফুলে গেছে। এক্স–রে করতে দেওয়া হয়েছে। তাঁর হাত ব্যান্ডেজ করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মাকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আলীম দাবী করেন, তাঁর ভাই ও বোনদের প্ররোচনায় থানায় মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। ভাই-বোনদের অংশ কম বেশি করে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

গুরুদাসপুরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, আলীমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।