সওজের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে

দুদক
দুদক

ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবালের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর স্ত্রী ফাহমিদা নিলুফারের বিরুদ্ধেও মামলা করা হবে । আজ মঙ্গলবার দুজনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।

দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সওজের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ফিরোজ ইকবাল ও তাঁর স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করেন দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ। তাঁর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন মামলার অনুমোদন দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাহমিদা নিলুফার দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তাঁর নিজের নামে টাঙ্গাইলের করটিয়া মৌজায় পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৫১ শতাংশ জমি এবং ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেন। দুদকের অনুসন্ধানে প্রায় ৬১ লাখ টাকার স্থাবর এবং ৪২ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এসব সম্পদের অর্জনের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি। দুদক বলছে, অনুসন্ধানে কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাট, ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট ও গাড়ির তথ্য দুদকে দেননি। সব মিলিয়ে তাঁর ৮৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।

দুদক বলছে, ফাহমিদা নিলুফার একজন গৃহিণী। তাঁর স্বামী একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পাওয়া বেতনে তাঁর দুই সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে এবং লন্ডন–আমেরিকায় পড়িয়েছেন। তারপরও তাঁর নিজের এবং স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে লাখ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন দেখা গেছে। ফাহমিদা নিলুফারের ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন পেয়েছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। ওসব লেনদেনের বিষয়ে সুনির্দষ্ট কোনো তথ্য তাঁরা দিতে পারেননি।

অনুসন্ধান কর্মকর্তার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, স্বামী ফিরোজ ইকবালের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থ বৈধ করার লক্ষ্য নিয়ে ফাহমিদা নিলুফার স্বামীকে সহায়তা করেছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও দুর্নীতি দমন আইনে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে ফিরোজ ইকবালের বিরুদ্ধে মামলা করেন শাহীন আরা মমতাজ। মামলার এজাহারে বলা হয়, ফিরোজ ইকবাল ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিজ নামে ৬৪ লাখ ৬৭ হাজার ৩৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন তিনি। এ ছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে তাঁর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।