সাবেক সাংসদ আউয়াল ও স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

এ কে এম এ আউয়াল।
এ কে এম এ আউয়াল।

পিরোজপুর-১ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরদিনই তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সরকারি জমি দখল করে বাড়ি–বাংলো নির্মাণের অভিযোগে আউয়ালের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সংস্থার উপপরিচালক মো. আলী আকবর আজ মঙ্গলবার পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বরাবর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দেশে মানি লন্ডারিংসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদকের কাছে তাঁদের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার তথ্য থাকায় এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার সাংসদ আউয়ালের বিরুদ্ধে তিনটি মামলার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এর একটিতে আউয়ালের স্ত্রী লায়লা পারভীনকেও আসামি করা হচ্ছে। আগামি সপ্তাহেই মামলা তিনটি হবে বলে দুদক জানিয়েছে।

দুদক জানায়, সাবেক সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ছয়জন ভুয়া ব্যক্তিকে ভূমিহীন দেখিয়ে সরকারি খাস জায়গা ইজারা নেন। পরে ওই সরকারি জমিতে স্ত্রী লায়লা পারভীনের নামে তিনতলা ভবন তৈরি করে তা পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে ভাড়া দেন। এ অভিযোগে আউয়াল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করবে দুদক।

একইভাবে স্বরূপকাঠি উপজেলার ডাকবাংলোর কাছে সরকারি খাসজমি অবৈধভাবে দখল করে আধুনিক ডাকবাংলো নির্মাণ করেছেন সাবেক এই সাংসদ। পিরোজপুর শহরের খুমুরিয়া মৌজার রাজার পুকুর নামে পরিচিত ৪৪ শতাংশ সরকারি খাসজমির চারদিকে প্রাচীর নির্মাণ করে তা দখলে রাখার অভিযোগ দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

এ ছাড়া সাবেক এই সাংসদ ও তাঁর স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টিও অনুসন্ধান চলছে দুদকে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাঁদের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁদের কাছে সম্পদ বিবরণীর নোটিশও দিয়েছে সংস্থাটি। ২১ কর্মদিবসের মধ্যে তাঁদের ওই হিসাব জমা দিতে হবে।

পিরোজপুর-১ আসন থেকে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পরপর দুবার আওয়ামী লীগের টিকিটে সাংসদ হন আউয়াল। তবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। তাঁর জায়গায় মনোনয়ন পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন বর্তমান গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।