ছেলেকে বেঁধে স্ত্রীকে ছ্যাঁকা দেওয়া প্রবাসী গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীতে ছেলেকে বেঁধে স্ত্রীর শরীরে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রবাসী মোশারফ হোসেন ওরফে উজ্জ্বলকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নোয়াখালী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. আবদুর রহীম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে মোশাররফকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি সৌদি আরব চলে যেতে চেয়েছেন।

নিলুফা ইয়াসমিন নামের ওই গৃহবধূর অভিযোগ মতে, গত ১৮ ডিসেম্বর যৌতুকের আরও টাকার দাবির জেরে তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাত নয়টার দিকে মোশারফ বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করে ছেলেকে বেঁধে রাখেন। এর পর গরম খুন্তি দিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেন। মাথার চুলও কেটে দেন। ছেলের গলায় ছোরা ধরে তাঁকে চিৎকার দিতে দেওয়া হয়নি। রাত ১০টার দিকে তিনি বাসা থেকে কৌশলে ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে কবিরহাটে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন।

গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ওই গৃহবধূকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ খবর পেয়ে মোশারফ পরের দিন শনিবার রাতে সন্ত্রাসী নিয়ে তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই গৃহবধূকে সোমবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বাক্‌প্রতিবন্ধী এক ছেলের ২৭ বছর বয়সী এই মা এখন নির্যাতনের ক্ষতে ছটফট করছেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে। তাঁর মুখ, চোখ, হাতসহ শরীরের বেশির ভাগ অংশেই খুন্তির ছ্যাঁকা। মাথার চুল কাটা। নোয়াখালী শহরের বছিরার দোকান এলাকায় ভাড়া বাসায় ওই ঘটনা ঘটেছিল। নিলুফার বাবার বাড়ি নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বড় রামদেবপুর গ্রামে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার নোয়াখালীর সুধারাম থানা মামলা করেছেন নিলুফারের বাবা ইউছুফ আলী। প্রায় নয় বছর আগে বেগমগঞ্জ উপজেলার খানপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের সঙ্গে নিলুফার বিয়ে হয়েছিল।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাসির উদ্দিন বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীর মুখ, হাত, পাসহ পুরো শরীরে অসংখ্য ছ্যাঁকার পোড়া দাগ রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে কিছুদিন সময় লাগবে।