নিলামে বিক্রি হয়নি ব্রহ্মপুত্রের বালু

চলছে ব্রহ্মপুত্র নদ খননের কাজ। খননের বালু ফেলা হচ্ছে পাশের চর এলাকায়। চর জেলখানা, ময়মনসিংহ,২৩ ডিসেম্বর। ছবি: আনোয়ার হোসেন
চলছে ব্রহ্মপুত্র নদ খননের কাজ। খননের বালু ফেলা হচ্ছে পাশের চর এলাকায়। চর জেলখানা, ময়মনসিংহ,২৩ ডিসেম্বর। ছবি: আনোয়ার হোসেন

নিলামে বিক্রি হয়নি ব্রহ্মপুত্র নদের বালু। ব্রহ্মপুত্র নদ খননের পর উত্তোলিত বালু গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি হওয়ার কথা ছিল। দুজন ক্রেতা নিলামে অংশ নিলেও তাঁরা নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্যের চেয়েও কম মূল্য ঘোষণা করায় বালু বিক্রি হয়নি।

ব্রহ্মপুত্র নদ খননের পর গফরগাঁও উপজেলায় উত্তোলিত বালু গতকাল নিলামে বিক্রি হওয়ার কথা ছিল। ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শের মাহমুদ মুরাদ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত জুলাই মাসে ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের খননকাজ শুরু হয়। কাজের শুরু থেকেই বিনা মূল্যে অথবা নামমাত্র মূল্যে বালু পেতে ত্রিশাল ও গফরগাঁও উপজেলায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপ ছিল। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে নিলামে বালু বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শের মাহমুদ জানান, গফরগাঁওয়ে নিলামে বালু বিক্রির জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে প্রতি ঘনফুট বালুর ন্যূনতম মূল্য ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। গতকাল নিলামে দুজন ক্রেতা অংশ নিলেও তাঁরা ন্যূনতম মূল্যের চেয়েও কম মূল্য ডাকেন। তাই বালু বিক্রি হয়নি। পরবর্তী সময়ে আবার নিলাম আহ্বান করে বালু বিক্রি করা হবে।

নদ খননের কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বালু নিয়ে প্রভাবশালী মহলের চাপ সৃষ্টি হয়। ত্রিশাল ও গফরগাঁওয়ের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি খননের পর উত্তোলিত বালু পেতে খনন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। খনন প্রকল্পের নিয়মমতে, উত্তোলিত বালু প্রয়োজন অনুযায়ী খনন এলাকার কাছাকাছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে দেওয়ার কথা। বাকি বালু প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি হবে।

খনন প্রকল্পের সূত্র জানায়, বর্তমানে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রহমতপুর এলাকা থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার অংশে খননকাজ চলছে। এ অংশে মোট ২৪টি ড্রেজার মেশিন কাজ করছে। এক বছরে নদের মোট ১ লাখ ঘনমিটার খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রায় ৬ মাসে ৫৫ লাখ ঘনমিটার খনন হয়েছে।

খননকাজ শুরুর পর ময়মনসিংহের নাগরিক সংগঠন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন আন্দোলনের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাতে ব্রহ্মপুত্র খননকাজের বিষয়ে সব তথ্য প্রকাশ করার জন্য দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া খনন বিষয়ে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়।

ব্রহ্মপুত্র নদ খনন প্রকল্পের পরিচালক রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র খননে আমরা একসঙ্গে ২৪টি ড্রেজার ব্যবহার করছি। এটি বাংলাদেশে রেকর্ড। আমরা আশা করছি, যথাসময়েই খনন শেষ হবে।’