সুপারশপের কর্মী সোহানা হত্যা, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ

প্রতীকী ছবি। এএফপি
প্রতীকী ছবি। এএফপি

রাজধানীর পুরান ঢাকায় সোহানা আরেফিন (২৮) নামের এক নারীকে হত্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।

ওই আসামির নাম মনিরুল ইসলাম (২৪)। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম থানার রামারবাগ গ্রামে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত সোহানা আরেফিন পুরান ঢাকার ওয়ারীর সুপারশপ স্বপ্ন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তাঁকে হত্যা করার অভিযোগে আসামি মনিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী আসামি মনিরুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার এলাকায় সোহানা আরেফিনকে হত্যা করার অভিযোগে নিহত নারীর বাবা আবু সালেক বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলায় আবু সালেক বলেন, তাঁর মেয়ে সোহানার এক মেয়ে। দুই বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় তাঁর মেয়ে খিলগাঁও এলাকায় তাঁর বাসায় থাকতেন। গত রোববার তাঁর মেয়ে ওয়ারীতে তাঁর কর্মস্থলে চলে যান। রাত ১০টার সময় পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে তাঁকে জানান, তাঁর মেয়ে সোহানা মারা গেছেন। এই খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাসপাতালে আসেন। দেখেন তাঁর মেয়ের লাশ মর্গে পড়ে আছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অফিস শেষে তাঁর মেয়ে পূর্বপরিচিত মনিরুল ইসলামের সঙ্গে রাত সাড়ে আটটার দিকে বের হন। পথচারীদের মাধ্যমে জানতে পারেন, হত্যা করার উদ্দেশ্যে তাঁর মেয়েকে পুরান ঢাকার চিত্রা হলের সামনে মোটরসাইকেল থেকে ফেল দেন আসামি মনিরুল। পরে ওই আসামি সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে তাঁর মেয়েকে নিয়ে আসেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন আসামি মনিরুলকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সোহানা আরেফিনের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। আসামি মনিরুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। কীভাবে সোহানা আরেফিন মারা গেলেন, সেই রহস্য উদ্‌ঘাটন করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

আদালতকে পুলিশ প্রতিবেদন দিয়ে বলছে, আসামি মনিরুলের স্বভাবচরিত্র খারাপ প্রকৃতির। নিহত সোহানার সঙ্গে চার-পাঁচ মাস আগে মনিরুলের প্রেমের সম্পর্ক হয় বলে জানা যায়।

আবু সালেক আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মেয়ে যখন উচ্চমাধ্যমিকে পড়েন, তখন বিয়ে হয়। তাঁর সন্তানের বয়স এখন সাত বছর। দুই বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক না থাকার কারণে মেয়েকে নিজের কাছে এনে রাখেন। মনিরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর মেয়ের পরিচয় ছিল। তবে কী সম্পর্ক ছিল, তা তিনি জানতেন না।

আবু সালেক বলেন, ‘আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। মোটরসাইকেল থেকে পড়ে সোহানা মারা যায়নি। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’