ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ১০ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ, দীর্ঘ যানজট

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া অংশে গাড়ি দীর্ঘ লাইন। ছবিটি সকালে গোয়ালন্দ ফিডমিলের সামনে থেকে তোলা, ২৫ ডিসেম্বর। ছবি: রাশেদুল হক
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া অংশে গাড়ি দীর্ঘ লাইন। ছবিটি সকালে গোয়ালন্দ ফিডমিলের সামনে থেকে তোলা, ২৫ ডিসেম্বর। ছবি: রাশেদুল হক

ঘন কুয়াশার কারণে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত ১০ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। পাশাপাশি বড়দিন ও মাঝের এক দিন পরে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ছিল যানবাহনের বাড়তি চাপ। ফলে পাটুরিয়া ঘাট প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে নৌদুর্ঘটনা এড়াতে রাত ১১টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় পাটুরিয়ায় যানবাহনের চাপ পড়তে শুরু করে। আজ সকালে গাড়ির চাপা আরও বেড়ে যায়। কুয়াশার তীব্রতা কমে গেলে সকাল নয়টার দিকে পুনরায় ফেরি চালু হয়।

যাত্রী এবং যানবাহনের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেরি চলাচল শুরু হলেও সকাল ১০টার দিকে পাটুরিয়া প্রান্তে যানবাহনের চাপ আরও বেড়ে যায়। এতে পাটুরিয়া ঘাট ছেড়ে যাত্রীবাহী বাসের সারি প্রায় তিন কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। এসব যাত্রীবাহী বাস পাটুরিয়া-উথলী সড়কের আড়পাড়া পর্যন্ত পৌঁছায়। আজ ছিল বড়দিনের ছুটি। এর এক দিন পরেই আগামী শুক্র ও পরের দিন শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। মাঝখানে বৃহস্পতিবার অনেকে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাত্রা করেন। এর ফলে আজ পাটুরিয়ায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপও বেড়ে যায়। তার ওপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ থাকায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

যশোরগামী হানিফ পরিবহনের বাসের যাত্রী একরামুল হক একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।স্ত্রী, দুই সন্তান ও মাকে নিয়ে যশোরের কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। একরামুল হক জানান, সকাল ১০টায় পাটুরিয়া-উথলী সড়কের আড়পাড়া এলাকায় তাঁদের বাসটি দীর্ঘ সারিতে আটকা পড়ে। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পরও ফেরি টিকিট পাওয়া যায়নি। ভোগান্তির বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কনকনে শীত, তার ওপর খোলা জায়গায় বাসের মধ্যে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা। আশপাশে খাবার হোটেলও নেই। শৌচাগার না থাকায় পাশের গ্রামের এক বাড়িতে যেতে হয়েছে।’

দীর্ঘ সময় ধরে আটকে পড়া যাত্রীরা রাস্তার পাশে থাকা দোকানগুলোতে ভিড় করেন। গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, ২৫ ডিসেম্বর। ছবি: রাশেদুল হক।
দীর্ঘ সময় ধরে আটকে পড়া যাত্রীরা রাস্তার পাশে থাকা দোকানগুলোতে ভিড় করেন। গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, ২৫ ডিসেম্বর। ছবি: রাশেদুল হক।

ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের শ্রমিকেরাও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পাটুরিয়ায় টার্মিনালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় পণ্যবাহী এসব গাড়িকে উথলী মোড় থেকে আরিচা পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। এসব গাড়ি এক থেকে দুই দিনেও নদী পার হতে পারেনি।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জিল্লুর রহমান বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ১০ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ে যায়। আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী দেড় শতাধিক বাস নদী পারের অপেক্ষায় ছিল।