দিনরাত কাটে ইন্টারনেটে

ইন্টারনেটে কী কী কাজ হয়, সেই হিসাব রাখার চেয়ে কোন কোন কাজ হয় না—সেই হিসাব রাখা বেশি সহজ। অন্তত আঙুল গুণেই তা মনে রাখা সম্ভব। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী টিম বার্নার্স লির এই উদ্ভাবন। দিনকে দিন ইন্টারনেটের সঙ্গে মানুষের বাঁধন আরও দৃঢ় হচ্ছে।

বিশ্বজুড়েই ইন্টারনেটের আধিপত্য বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। জন্মদিনের ছবি আপলোড থেকে শুরু করে বাজারসদাই, চাকরির আবেদন, টাকা লেনদেন—সবই এখন সম্ভব ইন্টারনেটে। 

বাংলাদেশের তরুণেরা এখন অবসরে একটা বড় সময় কাটাচ্ছেন ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। টেলিভিশন দেখা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পরই এর অবস্থান। 

প্রথম আলোর উদ্যোগে পেশাদার জরিপ সংস্থা ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেডের এক জরিপে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। জরিপে দেখা গেছে, অবসরে সময় কাটানোর উপায় হিসেবে ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চ্যাটিং বা গল্পগুজবে তরুণেরা বেজায় আগ্রহী। ৫৩ শতাংশের বেশি তরুণের কাছে এটি জনপ্রিয়। এ প্রবণতা শহর ও গ্রামাঞ্চল—সবখানে প্রায় একই।

দেশের তরুণেরা গড়ে প্রতিদিন ৮৭ মিনিট বা প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় ইন্টারনেটে কাটান। ২০১৭ সালে এটি ছিল ৮০ মিনিট। টেলিভিশন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গল্পগুজবেও এত সময় দিচ্ছেন না তরুণেরা। এ প্রবণতা শহুরে ও উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মধ্যে তুলনামূলক বেশি। এই দুই শ্রেণির তরুণেরা প্রতিদিন গড়ে ১০০ মিনিটের বেশি সময় কাটান ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। 

২০১৭ সালের সঙ্গে এবারের জরিপের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইন্টারনেট ব্রাউজ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তরুণদের সময় কাটানোর হার আগের চেয়ে বেড়েছে। ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় কাটানোর ক্ষেত্রে তরুণের সংখ্যা গতবারের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি। আর দুই ঘণ্টার বেশি সময় কাটানোর ক্ষেত্রে তরুণদের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। 

গুণগত জরিপে তরুণেরা বলেছেন, তাঁদের কাছে অবসর কাটানোর সেরা উপায় ইন্টারনেট। বই-পত্রিকা পড়া, টেলিভিশন দেখা বা রেডিও শোনা—কিছুই এর ধারেকাছে নেই। শহুরে তরুণদের কাছে ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। কারণ, এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক খবর পাওয়া থেকে শুরু করে পরিবার-পরিজন ও দূরদূরান্তের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা যায়।