আড্ডা-খুনসুটি আর স্মৃতিচারণা

মুশুলী উচ্চবিদ্যালয়ের ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ তম ব্যাচের ছাত্র আবদুর রহমান ও আবদুল কাদের (ডানে)। গতকাল পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে।  ছবি: প্রথম আলো
মুশুলী উচ্চবিদ্যালয়ের ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ তম ব্যাচের ছাত্র আবদুর রহমান ও আবদুল কাদের (ডানে)। গতকাল পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে। ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মুশুলী উচ্চবিদ্যালয়ে গতকাল বুধবার প্রথমবারের মতো প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘদিন পর প্রাণের বন্ধুকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত ছিলেন সবাই। ভাগাভাগি করেছেন আনন্দ-দুঃখ। স্মৃতি রোমন্থন করেছেন শিক্ষাজীবনের।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু করেন ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের সাংসদ মো. আনোয়ারুল আবেদীন খান। সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এস এ নেওয়াজী (পিপিএম), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুর রহিম, জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীর, নান্দাইল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মালেক চৌধুরীসহ মুশুলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকেরা। সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠান কমিটির আহ্বায়ক মো. শহীদুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অনুষ্ঠান কমিটির সদস্যসচিব খালেদ রহমান।

কনকনে ঠান্ডা ও কুয়াশাচ্ছন্ন চারপাশ। এ রকম বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই অনুষ্ঠানস্থলে একজন-দুজন করে নিবন্ধিত প্রাক্তন শিক্ষার্থীর আগমন ঘটতে থাকে। ব্যান্ডের তালে তালে বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী ও স্কাউট দলের সদস্যরা একটি শোভাযাত্রা নিয়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। তারা ফটকে দাঁড়িয়ে অতিথি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বিদ্যালয়ের আঙিনা সরগরম হয়ে ওঠে।

অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর সহপাঠীকে কাছে পেয়ে একজন আরেকজনকে বুকে জড়িয়ে নিচ্ছেন। পরস্পর কুশল বিনিময় করছেন। সঙ্গে ছিল খুনসুটি, আড্ডা। পুরোনো বন্ধুদের কথাবার্তায় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

অনুষ্ঠানস্থলে দুটি চেয়ারে পাশাপাশি বসে পুরোনো দিনের গল্প করছিলেন মুশুলী উচ্চবিদ্যালয়ের ১৯৭৬ ব্যাচের ছাত্রী তসলিমা রহমান ও তাহমিনা আক্তার। তাঁরা অনুষ্ঠানে এসে একে অপরকে খুঁজে বের করেছেন। তসলিমা বলেন, পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসে তিনি যে আনন্দটুকু পেয়েছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এটা অন্য রকম অভিব্যক্তি।

বাবলী দাস বলেন, ‘অনুষ্ঠানে এসে অনেক বান্ধবীর দেখা পেয়েছি। খুব ভালো লেগেছে।’ ১৯৬৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আবদুর রহমান ও ১৯৬৯ ব্যাচের আবদুল কাদের বলেন, তাঁদের অনেক সহপাঠী বেঁচে নেই। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসে কয়েকজনের দেখা পেয়েছেন। অনেক ভালো লেগেছে।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী স্মৃতিচারণামূলক বক্তব্য দেন। তাঁরা কয়েক যুগ আগের শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের ধরন প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরেন। এ সময় একাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।