ইউএনওর গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ, মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পাথরঘাটার ইউএনওর গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। বরগুনা, ২৬ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
পাথরঘাটার ইউএনওর গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। বরগুনা, ২৬ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় মোটরসাইকেলের অপর আরোহী গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে পাথরঘাটার মধ্য বাইনচটকী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম বশির পঞ্চায়েত। তিনি পাথরঘাটার কাকচিড়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামের খালেক পঞ্চায়েতের ছেলে। আহত ব্যক্তির নাম মোফাজ্জল হোসেন। তিনি ভোলার লালমোহন উপজেলার বাসিন্দা। পাথরঘাটার ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাঁদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বশিরকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় ইউএনও হুমায়ূন কবির সরকারি গাড়ি নিয়ে পাথরঘাটা থেকে বরগুনা যাওয়ার জন্য ফেরিঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন। আর বশির পঞ্চায়েত তাঁর বন্ধুকে নিয়ে বাইনচটকী থেকে কাকচিড়া বাজারের দিকে আসছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. মনির হোসেন বলেন, ‘ইউএনও স্যারের গাড়িটি পাথরঘাটা থেকে দ্রুতগতিতে আসছিল। গাড়িটি বাইনচটকি এলাকার পুরাতন ক্লাবের সামনে আসতেই মোটরসাইকেলটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, সংঘর্ষের পর মোটরসাইকেলটি ইউএনওর গাড়ির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ হাত দূরে চলে যায়। তাঁদের অভিযোগ, ইউএনওর গাড়ির চালক তাৎক্ষণিক ব্রেক করেননি।

ইউএনও মো. হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গাড়ি নিয়ে পাথরঘাটা থেকে জেলা শহর বরগুনায় যাচ্ছিলাম। এমন সময় বিপরীত দিকের রং পাশ থেকে মোটরসাইকেলটি দ্রুতগতিতে এসে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায়।’

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছি। সংঘর্ষে মোটরসাইকেলচালক বশির পঞ্চায়েত নিহত হয়েছেন। এতে ইউএনওর গাড়ি ও মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ইউএনওর গাড়ি সঠিক লাইনে রয়েছে। মোটরসাইকেলটি রং সাইডে যাওয়ায় সংঘর্ষ হয়।’

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক তাসকিয়া সিদ্দিকা প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। অপরজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত বশিরের বাবা খালেক পঞ্চায়েত বলেন, বিকেলে তাঁর ছেলে বন্ধুকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। কিছুদিনের মধ্যে তাঁর বিদেশ যাওয়ার কথা। বশির তিনটি মেয়ে রয়েছে। খালেক পঞ্চায়েত বলেন, আগামীকাল কিছু জমি কেনার জন্য ছেলে তাঁকে পাথরঘাটা নেওয়ার কথা ছিল। তাঁর আক্ষেপ, এখন কে তাঁকে পাথরঘাটা নিয়ে যাবে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির পরিবারকে আমরা সহায়তা করব। গুরুতর আহত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।’