'এমন মানুষ পাওয়া যাবে না রাজশাহী কলেজ দেখে মুগ্ধ হবে না'

রাজশাহী কলেজের এইচএসসি পুনর্মিলনী-২০১৯ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সাহেববাজার, রাজশাহী, ২৭ ডিসেম্বর। ছবি: শহীদুল ইসলাম
রাজশাহী কলেজের এইচএসসি পুনর্মিলনী-২০১৯ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সাহেববাজার, রাজশাহী, ২৭ ডিসেম্বর। ছবি: শহীদুল ইসলাম

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে রাজশাহী কলেজে এসে মুগ্ধ হবেন না। ভাষার জন্য প্রথম আন্দোলন এখানে, প্রথম শহীদ মিনার এই কলেজেই। বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রামে এই কলেজের অবদান অনস্বীকার্য।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী কলেজের ‘এইচএসসি পুনর্মিলনী-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অ্যালামনাই উপলক্ষে সকালে কলেজ চত্ত্বর থেকে নগরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথি, কলেজের শিক্ষক এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। দেশে রাজশাহী কলেজেই প্রথমবারের মতো এইচএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অ্যালামনাই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এই কলেজ বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া, ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকার, কবি রজনীকান্ত সেন, চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক, ভারতীয় রাজনীতির পুরোধা জ্যোতি বসু, বিচারপতি হাবিবুর রহমানের কলেজ। সংসদে এই কলেজ থেকে পাস করা একজন মন্ত্রী আছেন, একজন হুইপ আছেন, আট জন সংসদ সদস্য আছেন। নির্বাচন কমিশনার এই কলেজের ছাত্র। ১৪৭ বছরের ইতিহাসে রাজশাহী কলেজ অসংখ্য গুণীজন তৈরি করেছে। দেশ-বিদেশে তাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাঁদের মতো আরও অনেক গুণীজন এই কলেজ থেকে তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।

দেশের ১৩টি শতবর্ষী কলেজকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছাপ্রকাশ করে দীপু মনি আরও বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে পর পর তিনবার দেশসেরা হয়েছে রাজশাহী কলেজ। কলেজের যে সমস্ত সমস্যা আছে সেগুলো দূর করা হবে। এখানে আরও একটা ছাত্রীনিবাস খুব প্রয়োজন। প্রশাসন ভবনেরও দরকার। অচিরেই এখানে দশতলা ছাত্রীনিবাস হবে। প্রশাসন ভবনও করে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, রাজশাহী-৩ আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিন, নাটোর-৪ আসনের সাংসদ আবদুল কুদ্দুস, রাজশাহীর সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ আদিবা আনজুম ও জ্যেষ্ঠ অ্যালামনাস এসএএ বারী। সভাপতিত্ব করেন কলেজ অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান।

অনুষ্ঠান শেষ হবে শনিবার। দুই দিনের এই আয়োজনে খরচ হচ্ছে দুই কোটি টাকারও বেশি। অংশ নিয়েছেন এইচএসসি ব্যাচের সাবেক ৯ হাজার শিক্ষার্থী। থাকছেন এক হাজার অতিথিও। সাবেক শিক্ষার্থীরা বহুদিন পর প্রিয় ক্যাম্পাসে এসে খুঁজে পেয়েছেন পুরনো বন্ধুদের। গল্প-আড্ডায় মেতে উঠেছেন সবাই।

পুনর্মিলনী উপলক্ষে কলেজের সাজসজ্জাও চোখে পড়ার মতো। ৩৫ একরের পুরো ক্যাম্পাসের সবখানেই উৎসবের ছোঁয়া। কলেজের মাঠে প্রশাসন ভবনের আদলে তৈরি করা হয়েছে বিশালাকার এক মঞ্চ। প্রাক্তন শিক্ষার্থী কবি রজনীকান্ত সেনের নামে মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রজনীকান্ত মঞ্চ’। দু’দিন ধরে এ মঞ্চে থাকছে আলোচনা, স্মৃতিচারণা, ছাত্রাবাসের স্মৃতিচারণা, সাংষ্কৃতিক সন্ধ্যা, আতসবাজিসহ নানা আয়োজন। শুক্রবার রাতে এই মঞ্চ মাতাবেন ব্যান্ড তারকা জেমস।