স্মৃতির ডানায় পেছন ফেরা

ঠাকুরগাঁও থেকে ১৯৯৪ সালে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে বের করা হয় শোভাযাত্রা। গতকাল জেলা শহরের শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়কে। ছবি: প্রথম আলো
ঠাকুরগাঁও থেকে ১৯৯৪ সালে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে বের করা হয় শোভাযাত্রা। গতকাল জেলা শহরের শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়কে। ছবি: প্রথম আলো

স্মৃতির ডানায় ভর করে ২৫ বছর পেছনে ফেরা। হইহুল্লোড় আর খুনসুটি। টুকরো টুকরো গল্প, আড্ডা। নাচ, গান, খাওয়াদাওয়া। বিশেষ মুহূর্ত বন্দী করা মুঠোফোনের ক্যামেরায়। ফিরে যাওয়া স্কুলজীবনের দিনগুলোয়।

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে গত বৃহস্পতি ও গতকাল শুক্রবার এভাবেই মেতেছিলেন ১৯৯৪ সালে এ জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাচের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলন উৎসবের আয়োজন করা হয়। এত দিন পর একে অপরের দেখা পেয়ে অনেকেই গেয়ে ওঠেন, ‘বন্ধু, কী খবর বল? কত দিন দেখা হয়নি...।’

উৎসবের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার জেলা শহরে সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের বড় মাঠে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। দিনভর তাঁরা মেতে থাকেন আড্ডা, গান আর হইহুল্লোড়ে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে আবার তাঁরা জড়ো হন বড় মাঠে। প্রথমে তাঁরা টি–শার্ট ও ক্যাপ সংগ্রহ করে পরে নেন। বেলা ১১টার দিকে সেখান থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মু. সাদেক কুরাইশী, জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায় প্রমুখ। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আগের জায়গায় ফিরে আসে। এরপর নিজেদের মধ্যে ভাববিনিময় চলে দুপুর পর্যন্ত। এ সময় স্মৃতির ডানায় ভর করে অনেকেই ফিরে যান ছাত্রজীবনে। হইহুল্লোড় আর দুষ্টুমিতে বারবার ফিরে আসে হারিয়ে যাওয়া আড্ডার টুকরো গল্প। অনেকেই বিশেষ এ মুহূর্ত মুঠোফোনের ক্যামেরায় বন্দী করেন। চলে নাচ-গান, খাওয়াদাওয়া।

উৎসবে যোগ দিতে ঢাকা থেকে এসেছিলেন শামীমা পারভীন। তিনি বলেন, ‘এসএসসির পর ব্যাচের অনেককেই আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম। অনেকে বিদেশে চলে গেছেন। আবার বন্ধুদের মধ্যে অনেকে কে কোথায় আছেন, কিছুই জানি না। আজকে অনেকের সঙ্গে দেখা হলো। যেন স্কুলজীবনের সেই দিনগুলোতে ফেরা হলো।’

বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হয় উৎসবের দ্বিতীয় অধিবেশন। মুঠোফোনের মাধ্যমে এ অধিবেশনের উদ্বোধন করে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন। এ পর্যায়ে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান। এরপর সম্মাননা দেওয়া হয় ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে অবসরে যাওয়া ১০ জন প্রবীণ শিক্ষককে। পরে ১৯৯৪ সালের এসএসসির ব্যাচ থেকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থী সন্দীপ কুমার সরকার ও মোর্শেদা শাকিলা জাহানকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অরুনাংশু দত্ত, উৎসবের আহ্বায়ক আবুল বাসার মো. সায়েদুজ্জামান প্রমুখ। আলোচনা শেষে ব্যান্ডশিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।

জানতে চাইলে উৎসবের আহ্বায়ক আবুল বাসার মো. সায়েদুজ্জামান বলেন, ১৯৯৪ সালে পাস করা সব বন্ধু দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলেন। ভবিষ্যতে আর যেন কেউ হারিয়ে না যায়, সে ব্যবস্থা করা হবে।