ছাত্রলীগকে নিয়ে 'মানহানিকর' বক্তব্য দেওয়ায় নুরুলের বিরুদ্ধে মামলা

নুরুল হক
নুরুল হক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে 'উসকানিমূলক' বক্তব্য এবং ছাত্রলীগ সম্পর্কে 'অসম্মানজনক ও মানহানিকর' বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে ডাকসুর ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক অর্ণব হোড়৷ বাদী ধানমন্ডি এলাকায় বসে এসব বক্তব্য শুনেছিলেন দাবি করে ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন৷

গত বৃহস্পতিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলাটি করা হয়। মামলায় অনুমতি ছাড়া এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে ফেসবুকে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে৷ নুরুল ছাড়াও তাঁর সহযোগী মুহাম্মদ রাশেদ খানকে মামলার আসামি করা হয়েছে৷

সনজিত চন্দ্র দাসের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দায়ের করতে দেরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন মামলার বাদী অর্ণব হোড়৷ ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন৷

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২৩ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে এসে ডাকসু ভিপি নুরুল হক বলেছেন, ‘বুয়েটের আবরার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু বকর, ঢাকা মেডিকেলের রাজিব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দিয়াজ, পুরান ঢাকার বিশ্বজিৎদের হত্যাকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ত্রাস, ভিন্নমতের ওপর প্রতিনিয়ত হামলাকারী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এই সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। স্বৈরাচারের বিরোধিতা ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, হত্যাসহ নানা ধরনের বর্বরতার প্রতিবাদ করার কারণেই এ পর্যন্ত ৯ বার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়৷ সর্বশেষ গতকাল ডাকসুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র”- এর এজেন্ট, ইসকন সদস্য সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এবং তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামক ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও মামুনের নেতৃত্বে আমাকে হত্যাচেষ্টায় ডাকসুতে তিন দফা আমার ওপর হামলা চালানো হয়। আমার সংগঠনের সহযোদ্ধাদের ওপর অসংখ্যবার হামলা চালানো হয়। এ দেশের ছাত্রসমাজ তথা সাধারণ মানুষ পাশে থাকলে হামলা করে কিংবা মামলা দিয়ে আওয়ামী স্বৈরাচারেরা কখনোই আমাদের থামাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। আওয়ামী লুটেরা, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীরা আজ পাকিস্তানি হানাদারদের থেকেও বর্বর হয়ে গেছে৷ সেটা তাদের কথাবার্তা ও কাজ-কর্মে ইতিমধ্যেই টের পাওয়া গেছে৷ তাই দেশকে মুক্ত করতে, জনগণকে বাঁচাতে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’— সনজিত চন্দ্র দাস সম্পর্কে এই উসকানিমূলক পোস্ট তাঁর সম্পর্কে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের জন্য অসম্মানজনক ও মানহানিকর।

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, ২২ ডিসেম্বর ভিপি নুরুল হকের ফেসবুক পেজে নুরুলের কক্ষ থেকে লাইভে এসে মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেছেন, ‘আমাদের সবার এই যে মাথা আলাদা কইরা ফেলছে।’ এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ওই ফেসবুক লাইভে প্রচারিত মিথ্যা গুজবের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়, যার দরুন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার উপক্রম হয়৷