'থার্টি ফার্স্ট নাইটে' উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করা যাবে না

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি: ডিএমপি নিউজ
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি: ডিএমপি নিউজ

কাল মঙ্গলবার ‘থার্টি ফার্স্ট নাইটে’ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও সমবেত হওয়া থেকে নগরবাসীকে বিরত থাকতে বলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। আজ সোমবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি আতশবাজি, পটকাবাজি, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালনাসহ যেকোনো ধরনের অশোভন আচরণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।

ডিএমপি কমিশনার জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কাল সন্ধ্যা ছয়টার পর বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার বাসিন্দাদের রাত আটটার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় চলে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন না, এমন কাউকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে সেসব এলাকায় না যেতে বলেছেন।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তা, ভবনের ছাদ এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত বা সমাবেশ বা উৎসব করা যাবে না। উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না বা নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ছয়টার পর বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় দেওয়া সাপেক্ষে নীলক্ষেত এবং শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ঢুকতে পারবে। গুলশান এলাকায় প্রবেশে কাকলি ক্রসিং এবং আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় দেওয়া সাপেক্ষে এ দুটি ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। রাত আটটার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। সন্ধ্যা ছয়টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না।

খ্রিষ্টীয় নববর্ষের প্রাক্কালে কাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ছয়টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব ধরনের লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এসব নির্দেশ মেনে না চললে ডিএমপি পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

ডিএমপি কমিশনার যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে নগরবাসীকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সহায়তা করার জন্য নগরবাসীর প্রতিও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ডিএমপি খ্রিষ্টীয় নববর্ষ-২০২০ উদ্‌যাপন নির্বিঘ্ন করতে নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।

ট্রাফিক ডাইভারশন ও পরামর্শ
ডিএমপি কমিশনারের ব্রিফিংয়ে নির্দিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের কোন কোন রুটে চলতে হবে, সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গুলশান, বনানী ও বারিধারায় প্রবেশের সব রাস্তা রাত আটটা থেকে বন্ধ রাখা হবে। তবে ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলি ক্রসিং) এবং আমতলী ক্রসিং (মহাখালী) খোলা রাখা হবে। সে ক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারার বাসিন্দাদের রাত আটটার মধ্যে এলাকায় প্রবেশ করতে হবে।

রাত আটটা থেকে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যানবাড়ি ক্রসিং, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে না। তবে ওই সব এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

একইভাবে কাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরদিন সকাল ছয়টা পর্যন্ত শুধু শাহবাগ ক্রসিং এবং নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিচয়পত্র প্রদর্শন এবং শনাক্তকরণের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এ জন্য পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে।

পলাশী ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং, বকশীবাজার ক্রসিং, রোমানা চত্বর ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং এবং শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সব ধরনের গাড়ির প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

হাইকোর্ট পয়েন্ট থেকে আগত সব ধরনের গাড়ি দোয়েল চত্বর দিয়ে বাঁয়ে মোড় নিয়ে শহীদুল্লাহ হল হয়ে চানখাঁরপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে।

কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালালে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে ব্রিফিংয়ে।

সড়ক ব্যবহারসংক্রান্তে যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে নগরবাসী ফোন করতে পারবে এই সব নম্বরে: ডিসি ট্রাফিক (নর্থ)-০১৭১৩৩৭৩২২৫, এডিসি ট্রাফিক (নর্থ)-০১৭১৩৩৭৩২২৬, এসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৭১৩৩৯৮৪৯৭, এসি ট্রাফিক (উত্তরা)-০১৭১৩৩৯৮৪৯৮, ডিসি ট্রাফিক (সাউথ)-০১৭১৩৩৭৩২২৩, এডিসি ট্রাফিক (সাউথ)-০১৭১৩৩৭৩২২৪, ডিসি (গুলশান)-০১৭১৩৩৭৩১৬৬ ও ডিসি (উত্তরা)-০১৭১৩৩৭৩১৫৬।