সুনামগঞ্জে বেহাল সড়কে দুর্ভোগ চরমে

সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বেশির ভাগ জায়গায় ইট ও পাথর বের হয়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চলাচলকারীরা। সম্প্রতি সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলা সদরে।  ছবি: প্রথম আলো
সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বেশির ভাগ জায়গায় ইট ও পাথর বের হয়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চলাচলকারীরা। সম্প্রতি সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলা সদরে। ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলা সদরের একটি বেহাল সড়ককে ঘিরে এখন দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। সড়কটির বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে ছোট ছোট ইটের সুরকি ও পাথর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। রয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি গর্ত। এ ছাড়া সড়কটিতে থাকা একমাত্র বক্স কালভার্টের ওপরের অংশ ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এর ওপর দিয়ে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটির প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ ঝুলে আছে। মেরামত হচ্ছে না হলিদাকান্দা গ্রামের পশ্চিমে থাকা কালভার্টটিও। এতে উপজেলার সেলবরষ, পাইকুরাটি, ধরমপাশা, জয়শ্রী ইউনিয়নসহ আশপাশের গ্রামবাসী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন, এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদরের আবদুল হেকিম চৌধুরী চত্বরের সামনে থেকে হলিদাকান্দা গ্রামের সামনের সড়ক পর্যন্ত সড়কটির দূরত্ব এক কিলোমিটার। উপজেলা সদর বাজারের ভেতরে থাকা প্রধান সড়কটি সরু হওয়ায় সব সময়ই দুই পাশে মানুষের জটলা লেগে থাকে। ফলে বিকল্প সড়ক হিসেবে ২০০২ সালে এই সড়কটি পাকাকরণের কাজ করে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। 

এরপর ৮–১০ বছর ধরে সড়কটির কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে সড়কটির বেশির ভাগ জায়গার কার্পেটিং উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। ফলে দিন দিন সড়কটির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এদিকে, সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে ধরমপাশা উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থা অনুন্নত, আর নেত্রকোনা জেলার সঙ্গে ধরমপাশার যোগাযোগ সহজ—এই যুক্তি দেখিয়ে ২০১৫ সালের ১১ আগস্ট এ উপজেলার সওজ কর্তৃপক্ষের যাবতীয় কার্যক্রম নেত্রকোনা জেলা সওজের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পরবর্তী সময়ে নেত্রকোনা সওজের কার্যালয়ের উদ্যোগে প্রায় আট মাস আগে সড়কের এবড়োখেবড়ো অংশগুলো ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। এতে মানুষ ও যান চলাচলের জন্য সড়কটি কোনোরকমে উপযোগী হলেও মাস তিনেক না যেতেই সড়কের ছোট ছোট ইটের সুরকি ও পাথর সড়কের ওপরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। সৃষ্টি হয় ছোট ছোট গর্তের। এ ছাড়া ওই সড়কের বক্স কালভার্টটির ওপরের অংশ ভেঙে গিয়ে সৃষ্টি হয় গর্ত। সড়কের শয়তানখালী খালের ওপর নির্মিত সেতুটির সংযোগ সড়কের দুই পাশে নেই পর্যাপ্ত মাটি। সড়কটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন রিকশা, ট্রাক, লেগুনা, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ গড়ে চার শতাধিক যানবাহন চলাচল করে। 

ধরমপাশা সরকারি কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রবি মিয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি না থাকায় সড়কটি ব্যবহার অযোগ্য হতে খুব বেশি দিন সময় লাগবে না। ধুলাবালির কারণে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ইচ্ছে করে না। যারা চলাচল করে, তাদের নিরুপায় হয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। দ্রুত এটি সংস্কার ও মেরামত করা প্রয়োজন। 

ধরমপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সড়কটির প্রয়োজনীয় সংস্কার ও মেরামতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।’ নেত্রকোনা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই সড়কটির সংস্কারকাজ করার জন্য দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’